নগরীর জোড়াগেট এলাকার আলোচিত শহীদুল হত্যার দায়ে আদালত দুই আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে এ মামলার অপর দুই আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম করাদন্ড দেওয়া হয়েছে এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে ।
মঙ্গলবার(৫ এপ্রিল) খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচার মোঃ সাইফুজ্জামান হিরো এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মোঃ মুরাদ হোসেন গাজী।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, সুমন মল্লিক ও আশিকুর রহমান আশিক (মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি ) কালু ওরফে ছোট কালু ও মোঃ তালেব হাওলাদার (যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি)। এদের মধ্যে তালেব বাদে সকল আসামি পলাতক রয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, শহিদুল জেড়াগেট এলাকার হাজেরা বেগমের ছেলে। পেশায় একজন মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী ছিল। গত ২০১৭ সালের ১১ জুলাই বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শহিদুল খুন হয় যে কারণে
শহিদুল ও আসামিরা একই এলাকার বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বেড়ে ওঠা তাদের। এলাকায় তারা চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদকের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। এলাকার প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাইদুল ও অন্যান্য আসামিদের মধ্যে মনমালিন্য হয়। হত্যাকান্ডের কয়েকমাস আগে প্রতিপক্ষ বাবু ওরফে গুড্ডু বাবুকে কুপিয়ে জখম করে সাইদুল। পরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে বাবু। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি শুকুর ও তালেবের মাধ্যমে ডেকে নেওয়া হয় ভিকটিমকে। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জোড়াগেট সংলগ্ন নাদিয়া অটোমোবাইলসের সামনে পৌছামাত্র সন্ত্রাসীরা তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় । প্রাণ রক্ষার জন্য শহিদুল ওই দোকানে ঢুকে পড়ে। সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। ঘটনার কিছুদিন পর গুড্ডু বাবু ক্রসফায়ারে নিহত হয়।
এ ব্যাপারে নিহতের মা আটজনের নাম উল্লেখসহ আজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে খুলনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে, যার নং, ১৯। মামলার প্রধান দুই আসামি বাবু ওরফে গুড্ডু বাবু ও আল মাহমুদ সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়ায় তাদের নাম বাদ দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও খুলনা থানার ইন্সপেক্টর সৈয়দ মেশারেফ হোসেন একই বছরের ২২ আগস্ট সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।