যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালে ভুল অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ৪ লাখ টাকায় রফাদফা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার (১ জুলাই) রাতে মৃত-নারী ইতি বেগমের স্বজনদের সাথে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গোপন বৈঠকের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ স্বরুপ ৪ লাখ টাকায় রফাদফা হয়। ফলে অনিয়মের মাধ্যমে ওই হাসপাতালের ডাক্তার মনজুরুল মোরশেদ ভুল অপারেশন করে একটি মানুষের জীবনের মূল্য ৪ লাখ টাকায় রফা হয়ে গেলো! বলে অভয়নগর উপজেলার সকল স্থানে বিষয়টি আলোচনা সমালোচনার ঝড়ে রুপান্তরিত হয়েছে।
অনেকে আক্ষেপের সাথে জানান, এমন ভাবে বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে যদি সিজারিয়ান অপারেশনে ভুল ভাবে একটি জীবন বিপন্ন হয়ে মৃত্যু হয়। আর সেই মৃত্যু যদি টাকার মাধ্যমে রফাদফা করে ধামাচাপা দেওয়া হয় । তবে ভবিষ্যতে ওইসব বেসরকারি হাসপাতাল – ক্লিনিক গুলোতে অনিয়ম- অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে এ আক্ষেপ করেন তারা।
অন্যদিকে নাগরিক সমাজ ও সচেতন মহল দাবি করেছেন, নওয়াপাড়ায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোর বিরুদ্ধে রোগীর মৃত্যুসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ তদন্ত করে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের আশু পদক্ষেপ কামনা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুন রবিবার আনুঃ সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার সময় নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালে ডাক্তার মনজুরুল মোরশেদের ভুল অপারেশনে ধোপাদী গ্রামের আরশাব শেখের মেয়ে ইতি বেগম (২২) এর মৃত্যু হয়। এই খবর নওয়াপাড়া বাজারে ছড়িয়ে পড়লে রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবি সকল শ্রেণীর উত্তেজিত জনগণ ওই বিতর্কীত বেসরকারি হাসপাতাল ঘেরাও করে জড়িত ডাক্তারের কঠিন শাস্তির জন্য আন্দোলন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গোপন বৈঠকে একটি জীবনের মূল্য ৪ লাখ টাকায় রফাদফা করে নিল বলে জানায় এলাকাবাসীরা।
এবিষয়ে নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালের ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ওই নারীর স্বজনদের সাথে মিমাংসা হয়েছে। কত টাকায় মিমাংসা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতটাকায় মিমাংসা হয়েছে তা আমার জানা নেই।
নওয়াপাড়া পৌরসভার সংরক্ষিত নারী আসনের (১,২,৩) কাউন্সিলর রোকেয়া বলেন, আমি মৃত নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতি পূরণ স্বরুপ ১০লাখ টাকা দাবী করেছিলাম কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ৪ লাখ টাকা দিয়ে মিমাংসা করে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার অলিয়ার রহমান বলেন, সামাজিক ভাবে মৃত ব্যক্তির স্বজনদের সাথে মিমাংসার আলোচনা চলছে, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে, মিমাংসা এখনো হয়নি।
এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
খুলনা গেজেট/এএজে