চার ঘণ্টা পর রাজধানী ঢাকার কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। উত্তরা, গুলশান, বারিধারা ও মিরপুরসহ কয়েকটি এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির কাউসার আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এখন ১০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে রাজধানীর আরেকটি অংশেও। ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেছেন, ধীরে ধীরে সরবরাহ শুরু করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ ও পুরান ঢাকার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে।
এর আগে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ (পলক) রাত ৯টার মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন।
জাতীয় গ্রিডের পূর্বাঞ্চলে (যমুনা নদীর এপার) বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিলে আজ দুপর ২টা ৫ মিনিটে একযোগে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের বিস্তৃত এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।
দেশের একমাত্র বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তিনজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলেছেন, নানা কারণে বিদ্যুতের গ্রিডে বিপর্যয় হতে পারে। এটি এক সেকেন্ডে হলেও তা পুনরায় চালু করার বিষয়টি জটিল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে।
এদিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সারাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হবে জানিয়ে দেশবাসীকে ধৈর্য ধারণের অনুরোধ জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার পৌনে ৫টার দিকে মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ অনুরোধ জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়েছে, ‘আকস্মিকভাবে আজ দুপুর ২টা ৪ মিনিটে জাতীয় গ্রিডের ইস্টার্ন অংশে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ) সমস্যা দেখা দেওয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। পিজিসিবির প্রকৌশলীরা দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় গ্রিড সচল করতে নিবিড় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎ সেবা চালু করা হবে বলে আশা করা যায়।’
এতে আরও বলা হয়, ‘পিজিসিবিসহ বিদ্যুৎ খাতের সব সংস্থা একযোগে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে বিনীতভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।’
অন্যদিকে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিদ্যুৎ বিভাগকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি এবং তৃতীয়পক্ষের একটি কমিটি বিভ্রাটের কারণ খুজে বের করতে কাজ করবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘোড়াশাল, টঙ্গীসহ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে ৷ সীমিত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, বিকল্প উপায়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন- হাসপাতাল, সরকারি জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।