খুলনায় আলোচিত কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামি পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তাকে এ মামলায় পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে এবং খুলনা থানার সাবেক এএসআই মিরান তাকে ফাঁসিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এএসআই মিরান শেখ।
সোমবার খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদ বলেন, ১০ মে দুপুর পৌনে একটার দিকে অজ্ঞাত মোবাইল থেকে তার কাছে ফোন আসে। অপরপ্রান্ত থেকে তাকে বলা হয় আপনি কি পিবিআই ইন্সপেক্টর মাসুদ বলছেন। উত্তরে তিনি বলেন হ্যাঁ। ওই মেয়েটির অপ্রীতিকর ছবি তার আইডি হ্যাক করে আপলোড করা হয়েছে বলে তার কাছে অভিযোগ করে। তাকে অফিসে আসতে বলেন মাসুদ। দুপুর দেড়টার দিকে অফিসে আসে সে। ছবিগুলো দেখানোর কথা বললে অপারগতা জানায় সে।
মাসুদ জানান, আদালতে গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি। এরপর দু’দিনের ছুটি নিয়ে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যান। ১৫ মে দুপুরে তিনি পিবিআই ইন্সপেক্টর এ্যাডমিন লুৎফর রহমানের সাথে একটি মামলার বিষয়ে আলাপ করার সময় মেয়েটি আবারও ফোন দিয়ে ধর্মসভা মন্দিরের কাছে আসতে অনুরোধ করে। সেখানে গিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে মাসুদ।
এরপর এসে তাকে জানানো হয় ছবি আপলোড দেওয়া ছেলেগুলো ছোট মির্জাপুরে আড্ডা দিচ্ছে। শুনে তারা উভয়ে সেখানে রওনা হয়। রয়েল ষ্টুডিওর সামনে গিয়ে মেয়েটি ইনকিলাব অফিসের গলিতে নিয়ে দেখিয়ে বলে ছেলেগুলো এখানে আড্ডা দেয়। গতকালও তাদের এখানে দেখা গেছে। তার কথার সাথে কাজের মিল না থাকায় কয়েকটি প্রশ্ন করার পর মেয়েটি রেগে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মোটরসাইকেলযোগে পিবিআই অফিসে ফিরে আসলে খুলনা থানা থেকে জানানো হয় তার বিরুদ্ধে ৯৯৯ থেকে একটি মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, মামলা দায়েরের পর জানতে পারলাম এই মেয়েটির খুলনা থানার সাবেক এএসআই মো: মিরান শেখের পূর্ব পরিচিত। কখনও তাকে স্ত্রী আবার কখনও তাকে বোনের পরিচয় দেয় ওই পুলিশ কর্মকর্তা। যা খোঁজ নিলে পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, এএসআই মিরান তার কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা ধার নিয়েছেন। একধিকবার ওয়াদাবদ্ধ হয়ে টাকা দিতে ব্যর্থ হয় সে। সর্বশেষ ১০ মে টাকা দেয়ার ধার্য দিন ছিল। সেদিন ব্যর্থ হওয়ার পর আইনী আশ্রয় নেয়ার কথা বললে তাকে ২৩ মে টাকা পরিশোধ করবে বলে তাকে জানায়। কিন্তু টাকা না দেয়ার উপায় হিসেবে মিরান ওই নারী দিয়ে তাকে ধর্ষণের মিথ্যা কাহিনী সাজিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
অপরদিকে খুলনা থানার সাবেক এএসআই মিরান খুলনা গেজেটকে বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ধার করি। এ বাবদ তাকে খুলনা পুলিশ কমিউনিটি ব্যাংক শিববাড়ি মোড় শাখার একটি সাদা চেক প্রদান করি। তিনি সেখানে ১৬ লাখ টাকা লিখেছেন। ইতিপূর্বে তাকে কয়েকলাখ টাকা সুদও দিয়েছি। যা খুলনা থানার কয়েকজন অফিসারও অবগত আছেন। মেয়েটি ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি তাকে চেনে না বলে জানিয়েছেন।