ভুক্তভোগী জনগণের ব্যানারে গত জুলাই মাস থেকে শুরু হওয়া দৌলতপুর খেয়াঘাট পার্শ্ববর্তী লঞ্চঘাটে স্থানান্তরের দাবি। দাবির সমর্থনে আন্দোলন ক্রমান্বয়ে জোড়ালো হতে থাকে। খেয়াঘাটটি স্থানান্তরের দাবিতে শুরু হয় গণস্বাক্ষর। দৌলতপুর খেয়াঘাট দিয়ে পারাপারকারী হাজার হাজার ভুক্তভোগী তাদের যৌক্তিক এবং ন্যায় সংগত এ গণদাবির পক্ষে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়।
ইতিমধ্যে আন্দোলনকারীরা খুলনা জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কেসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট ঘাট স্থানান্তরের দাবিতে গণস্বাক্ষরের কপি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট। দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং জেলা পরিষদে অবহিত করা হয়েছে। জেলা পরিষদের সমন্বয় কমিটির সভায়ও বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে। পারাপারের এ খেয়াঘাটটি পার্শ্ববর্তী লঞ্চঘাটে স্থানান্তরের দাবির যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কেসিসি এবং জেলা পরিষদদের পক্ষ থেকে পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহবুবুর রহমান শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকালে দৌলতপুর খেয়া ঘাটের দুই প্রান্ত, পার্শ্ববর্তী লঞ্চঘাট এবং দৌলতপুর বাজারের ভেতর দিয়ে যে সকল গলি খেয়াঘাটে আসতে হয় সকল পথগুলো পরিদর্শন করেন।
এ সময় জেলা পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাথে ছিলেন দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য ফারহানা হালিম, দৌলতপুর বাজার কমিটির সভাপতি কামাল হেসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নান্নু মোড়ল, দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মোল্যা আকরাম হোসেন, শেখ আব্দুস সালাম, মোল্লা মাকসুদুল ইসলাম, সৈয়দ শাহজাহান, জিএম আকরাম, সৈয়দ সেকেন্দার আলী, সাংবাদিক সৈয়দ জাহিদুজ্জামান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, শেখ রবিউল ইসলাম রাজিব, শেখ রিয়াজ, সালাউদ্দিন বাবু ও রাতুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, খুলনা জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং অপর প্রান্ত খুলনা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত খুলনা জেলার তৃতীয় বৃহত্তম পারাপারের এ খেয়াঘাটটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। নৌকায় উঠা নামার জন্য ঘাটের দুই প্রান্তের সিঁড়ি অত্যন্ত ঢালু। ভাঁটার সময় এ ঢালু সিঁড়ি দিয়ে অসহায়, জরুরি রোগী, বিকলাঙ্গ, বৃদ্ধ, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাসহ নারী পুরুষদের ওঠানামার জন্য মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দুর্ভোগ পোহাতে হয় মালামাল নিয়ে ওঠানাম যাত্রীদেরও। পারাপার যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ এখানেই নয়। দৌলতপুর খেয়াঘাট পার হয়ে বাজারের কাপড়ের পট্টির সরু গলি দিয়ে ক্রেতাদের ভিড় ডিঙিয়ে নারী-পুরুষ শিশু বৃদ্ধ আবাল বনিতা সবাইকে ঘেঁষাঘেঁষি করে সরু গলি পার হতে হয়। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ।
গুরুত্বপূর্ণ এ খেয়াঘাটটি দিয়ে তেরখাদা, নড়াইল বরদিয়া, কালিয়া, গাজীরহাট, দীঘল দ্বীপ দিঘলিয়ার হাজার হাজার মানুষ পারাপার হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম