ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুর সাধুহাটি-তৈলটুপি লালন সড়কের পুন:নির্মাণের দাবিতে ফুসে উঠেছে শিক্ষার্থী, শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ। দরপত্র আহব্বানের দেড় বছরেও পুন:নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে তাদের মাঝে। আদৌ পুন:নির্মাণ হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তারা। সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সড়কের বিভিন্ন স্থানে খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ আর গর্তের। অনেক স্থানে বর্ষার পানি জমে তলিয়ে গেছে সড়ক।
সোমবার সকাল ১১টায় এই বেহাল সড়কের পুন:নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী, ইজিবাইক শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। উপজেলার দোয়েল চত্তর মোড়ে এই মানববন্ধন হয়। এতে শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ অংশ নেয়। প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কজুড়ে মানববন্ধনে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে তারা সড়কটির দ্রুত পুন:নির্মাণের দাবি জানান।
এতে একাত্মতা জানিয়ে বক্তব্য দেন পৌরসভার মেয়র ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে টেন্ডার হয়েছে। নানা টালবাহানা করে ঠিকাদার কাজ শুরু করছেন না। বেহাল সড়কে মানুষের ভোগান্তি ক্রমেই বাড়ছে। তিনি কর্তৃপক্ষের নিকট সড়কটির দ্রুত পুন:নির্মাণের দাবি জানান।
মানববন্ধনে শহরের শিশুকলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী অভিজিৎ সাহা জানায়, সে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দুর থেকে এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করে। পুরো সড়ক খানাখন্দে আর গর্তে ভরা। আগে বাড়ি থেকে স্কুলে আসতে তার ১৫ মিনিটি সময় লাগতো। বেহাল সড়কে এখন তার এক ঘন্টা লাগে। এতে প্রায়ই ক্লাসে পৌছতে তারসহ অনেক শিক্ষার্থীরই দেরি হয়।
মানিক হোসেন নামে এক ইজিবাইক শ্রমিক জানান, ভাঙাচোরা সড়কে আধাঘন্টার পথে এখন তাদের যেতে দেড় ঘন্টা লাগে। কিন্তু ভাড়া আগের তুলনায় এখনও একই আছে। এতে তাদের আয় কমে গেছে। এছাড়া এই সড়ক দিয়ে এখন গাড়ি চালানো যায় না। বিকল্প হিসেবে গ্রামের সড়কগুলো দিয়ে অনেক ঘুরে চলাচল করতে হয়।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, শহরের দোয়েল চত্তর মোড় থেকে তৈলটুপি পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার। ২০০০ সালে এর কার্পেটিংয়ের কাজ হয়। এর মধ্যে ২০১৯ সালে তৈলটুপি পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার কার্পেটিং হয়। ২০২১ সালে বাকি সাড়ে বারো কিলোমিটার পুন:নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়। ইপিআইসি কেএপি পিওটি একেএইচআই জেভি নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এর কাজ পায়। এলজিইডির আম্পান প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ কোটি ৭২ লাখ ৬৩ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে এই সড়কটি পুন:নির্মাণের জন্য।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নাসের আলম সিদ্দিকী উজ্জল বলেন, বর্ষার কারণে কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। তবে দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে।
ঝিনাইদহ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার উদ্দিন বলেন, কাজ শুরু করতে আমি ইতোমধ্যে ঠিকাদারকে কয়েকটি চিঠি দিয়েছি। আজও তার সাথে কথা হয়েছে। আশা করছি আজকালের মধ্যে এর কাজ শুরু হবে। না হলে টেন্ডার বাতিল করা হবে।