খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  দে‌শের রাজনী‌তি‌তে আওয়ামী লীগ নি‌ষিদ্ধ
  ভারত ও পাকিস্তানে ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’ কার্যকর, সংকট সমাধানে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আলোচনা হবে
হাসিনা পালালেও তার প্রেতাত্মারা সক্রিয়

দেশের ১৮ কোটি মানুষ আ.লীগকে আর দেখতে চায় না : মীর্জা ফখরুল

গেজেট ডেস্ক

বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে কেউ আর আওয়ামী লীগকে দেখতে চায় না। কারণ দেশ স্বাধীনের পর থেকে বার-বার এই দলটি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার হরণ করেছে।

শনিবার (১০ মে) বিকেলে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ডের মাঠে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার প্রেতাত্মারা এখনো সক্রিয় রয়েছে। যাদের ওপর এই প্রেতাত্মাদের নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা ঠিক মতো তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছে না বলেই মাঝে মধ্যেই দেশে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিকাল ৩টায় নির্ধারিত সময়ে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসেন নেতাকর্মীরা। তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে দুপুরের আগেই নেতাকর্মীদের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ঐতিহাসিক পলো গ্রাউন্ডের মাঠ। বিশাল মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মানুষের ভিড় গিয়ে ঠেকে আশপাশের সড়ক মহাসড়কগুলোতে। সমাবেশ শুরুর এক পর্যায়ে বাড়তি উন্মাদনা তৈরি হয় ক্রিকেটার তামিম ইকবালের উপস্থিতি। বক্তব্য রাখেন তিনিও।

সমাবেশের প্রধান অতিথি মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়ে প্রথম সংস্কার করেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিসহ দেশের সব সংস্কারের পেছনে রয়েছে বিএনপির অবদান। এখন একটি গোষ্ঠী বিদেশে লেখাপড়া করে এসে বিএনপিকে সংস্কার শেখাতে চায়। দেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে কাউকে কিছু করতে দেয়া হবে না। তারেক রহমান বলেছিলেন ফয়সালা হবে রাজপথে; রাজপথেই হাসিনার পতন হয়েছে।

তিনি বলেছিলেন, টেক ব্যাক বাংলাদেশ সেটাও বাস্তবায়ন হয়েছে। এখন বলেছেন সবার আগে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশকে বিপন্ন করে কেউ কিছু করার চিন্তা করলে সেটা সফল হবে না বলে হুঁশিয়ারি জানান বিএনপির মহাসচিব। পাঠ্যপুস্তকে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের নাম না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। অনতিবিলম্বে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করে ওয়াসিমের নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সমাবেশের বিশেষ অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশের মালিকানা জনগণের হাতে তুলে দেয়ার জন্য ১৬ বছর ধরে সংগ্রাম করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা গুম হয়েছে খুন হয়েছে মামলা হামলার শিকার হয়েছে কিন্তু আন্দোলন বন্ধ করেনি এক দিনের জন্য। শেখ হাসিনার পলায়নের পর কেউ যদি নতুন করে দেশের গণতন্ত্র ও মানুষকে জিম্মি অন্য কারোর স্বার্থ হাসিল করতে চায় তাহলে এখনি তাদের সাবধান হয়ে যাওয়া উচিত। এখন নতুন করে রাজনীতির নতুন বন্দোবস্তের কথা বলা হচ্ছে, সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে সংস্কারও আছে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তও আছে।

নতুন এই রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ঘোষণা বেগম খালেদা খালেদা জিয়া সাত বছর আগেই দিয়ে রেখেছে। এখন শুধু বাস্তবায়ন করার পালা। আগামী নির্বাচনে এই ৩১ দফা নিয়ে জনগণের ম্যান্ডেট চাইবে বিএনপি। জনগণের রায় নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়ন করবে বিএনপি।

বাংলাদেশে নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে কেউ যেন এই নির্বাচনী আবহাওয়া রুখে দিতে না পারে।

তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অনেকে অনেক ফাঁদ পেতে রেখেছে। এসব ফাঁদে পা দেয়া যাবে না। যেকোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে।

সমাবেশ শুরুর আগে জুলাই বিপ্লবে উদ্দীপনা ছড়ানো গানগুলো পরিবেশন করা হয় তারুণ্যের সমাবেশ মঞ্চ থেকে। চট্টগ্রাম ছাড়াও কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ফেনী, কুমিল্লা ও বিহ্মণবাড়ীয়া জেলার নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব চট্টগ্রাম শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিরুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

খুলনা গেজেট/এমএনএস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!