দেশে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তাই যুক্তরাষ্ট্র যে বিষয়টিকে সামনে এনে র্যাব ও বাহিনীটির কর্মকর্তাদের দেশটিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটি সঠিক নয় বলে জানান তিনি।
রোববার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন এবং বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।
১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে এমন নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটি।
বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় ঢাকা। শনিবার ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তলব করে ব্যাখ্যা চায় বাংলাদেশ। সে সঙ্গে ঢাকার আপত্তির কথাও তাকে জানানো হয়। মিলার বিষয়টি ওয়াশিংটনে বাইডেন প্রশাসনের কাছে জানানোর কথা জানায় পরারষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিষয়টি নিয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাদের একটা কর্তব্য থাকে। সেটা হচ্ছে নিউ প্রসেস এবং যাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় তাদের পক্ষ শোনা। আমার কাছে যতটুকু তথ্য আছে, যাদের বিরুদ্ধে এই স্যাংশন দেয়া হয়েছে, তাদের পক্ষ শোনা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না।
‘আমি এটাও বলতে চাই, যেসব দোষে র্যাব ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে দোষী করা হয়েছে তা কিন্তু সঠিক নয়, এমনকি বিষয়টি কল্পনাপ্রসূত।’
বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশে কোন বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয় নাই।’
বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী, যারা বিদেশে পলাতক রয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘গত দুই দিন আগে ব্রিটিশ হাই কমিশনারের সঙ্গে আমার একটা সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে আমি এই দুইজনকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দাবি করেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, আমরা যেন ফর্মালি (আনুষ্ঠানিক) এই দাবি করি। আমি তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ফর্মালি দাবি করব।’
সে সময় আইনমন্ত্রীকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার বিষয়েও জানতে চান সংবাদকর্মীরা। আবেদনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা সে বিষয়ে বলেন, ‘একটু অপেক্ষা করুন, দেখবেন।’
২৬তম বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ৩০ জন জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর দায়রা জজ অংশ নেন।
প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- আইনজীবী সচিব গোলাম সারোয়ার, প্রশিক্ষণ কোর্সের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া।
খুলনা গেজেট/এনএম