অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এজেন্ট বলে আখ্যা দিয়েছে একটি পক্ষ। পরে বিষয়টি পরিস্কার করেছেন অভিনেত্রী নিজেই। বাঁধনের দাবি, তাকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’সহ বিভিন্ন সংস্থার এজেন্ট বলে ট্রল করা হচ্ছে। একদিন পরে আজ দেশপ্রেম নিয়ে কথা বললেন তিনি।
সোমবার সামাজিক মাধ্যমে ‘আমার স্বীকারোক্তি’ শিরোনামে একটি পোস্ট করেন বাঁধন। বলেন, দেশপ্রেম জন্মগত নয়, এটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গড়ে ওঠে। আমি শুধু বাংলাদেশের এজেন্ট।
বাঁধন লিখেছেন, ‘এক প্রভাবশালী ব্যক্তি একবার আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “তুমি কবে থেকে এত দেশপ্রেমিক হয়ে উঠলে?’ কারণ, আমি তখন প্রায়ই দেশের কথা বলছিলাম। সবসময় দেশের সমস্যা নিয়ে তাকে কথা বলতাম। আর তিনি বুঝতে পারছিলেন-এই বিষয়গুলো আমার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কতটা গভীর প্রভাব ফেলছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, “আমার দেশপ্রেমের শিকড় অনেক গভীরে। দেশপ্রেমের সবচেয়ে বড় উৎস আমার বাবা। তিনি আমার অনুপ্রেরণার মানুষ ছিলেন। বাবা একেবারেই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তবে পড়াশোনায় ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ভর্তি হন। বাবার জন্য এ বিরল সাফল্য।’
‘তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করে নেদারল্যান্ডসে মাস্টার্স করতে যান। সেখানে ভালো বেতনের চাকরির সুযোগ ছিল। স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়ারও সুযোগ ছিল। তবু তিনি দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। মা তখন কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। মা আমাদের জন্য একটু আরামদায়ক জীবন চেয়েছিলেন। কিন্তু বাবা সবসময় একটি কথা বলতেন, ‘আমি এই দেশের অর্থে পড়াশোনা করেছি। এখন সময় এসেছে ঋণ শোধ করার। যদি শুধু ডাল-ভাত খেয়ে থাকতে হয়, তবুও আমি এই দেশেই থাকব।” যা অভিনেত্রী বাঁধনের জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়।’
এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই এই কথা শুনে এসেছি। আর এ কথাগুলোই আমাকে গড়ে তুলেছে। বাবা অনেক বছর ধরে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের সেবা করেছেন। তার জীবনযাপন ও মূল্যবোধ দেখে আমার মনেও এর প্রভাব পড়েছে।’
সবশেষে অভিনেত্রী লিখেছেন, “দেশপ্রেম জন্মগত নয়, এটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গড়ে ওঠে। আর সেই সময়ের মধ্য দিয়েই আমি আমার দেশকে গভীরভাবে ভালোবেসে ফেলেছি। এই যাত্রায় আমার পিতা ছিলেন আমার প্রধান পথপ্রদর্শক। পাশাপাশি আমি আরও অনেক দেশপ্রেমিক মানুষের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি, যারা নিঃস্বার্থভাবে তাদের দেশকে ভালোবাসেন।’
খুলনা গেজেট/এনএম