খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ মাঘ, ১৪৩১ | ২০ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের
  সালমান-আনিসুল-পলকসহ ৮ জন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার
  ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম আজ থেকে শুরু

দেশজুড়ে রেকর্ড বৃষ্টিপাতে চরম ভোগান্তি, আজ থেকে আবহাওয়া উন্নতির সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে সাধারণত দেশে মৌসুমি বায়ু বিদায় নেয়। এই সময়ে কখনো কখনো ভারি বৃষ্টিপাত হয়। এ বছর পশ্চিমা লঘুচাপ সক্রিয় থাকায় তা মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে মিলে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রেকর্ড বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মৌসুমি বায়ু বিদায় নেওয়ার আগে এটাই শেষ বড় বৃষ্টিপাত হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে ৩৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা অক্টোবর মাস বিবেচনায় দেশের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। একই দিন নেত্রকোনায় ৩৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা অক্টোবর মাসের ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। সব মিলিয়ে অক্টোবর মাসে এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের ১০ ঘটনার তিনটিই চলতি অক্টোবরে।

আজ শনিবার দেশের অন্যান্য জায়গায় কিছুটা কমলেও ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় বৃষ্টি ঝরতে পারে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, লঘুচাপ বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করায় এই তিন বিভাগে বৃষ্টি বেশি থাকতে পারে। ঢাকায় বৃষ্টি কমলেও ময়মনসিংহ ও সিলেটে আগামী রবিবারও বেশি থাকতে পারে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় আছে। আগামী দুই দিনে বৃষ্টি ক্রমে কমে দিন-রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ৪৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা ২৪ ঘণ্টা বিবেচনায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক গতকাল বলেন, চলতি বছরে ২৪ ঘণ্টায় এটিই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। তবে বৃষ্টিপাত ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে যাচ্ছে। আজ দিনের দিকেই বৃষ্টি কমে আসবে। ময়মনসিংহ ও সিলেটে বেশি থাকতে পারে বৃষ্টি।

অক্টোবর মাসে এ রকম রেকর্ড বৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, অক্টোবর মাসে ৩০০ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টি হওয়ার ঘটনা আছে এখন পর্যন্ত মাত্র ১০টি। সে হিসাবে এই বৃষ্টিপাত কিছুটা অস্বাভাবিক। মূলত মৌসুমি বায়ু বিদায় নেয় অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে। বিদায় নেওয়ার প্রাক্কালে বৃষ্টি কিছুটা বাড়ে। মূলত পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ মৌসুমি বায়ু বিদায়ের প্রাক্কালে শক্তিশালী বা সক্রিয় হয়ে ওঠে। লঘুচাপ যখন সক্রিয় হয়ে ওঠে, দক্ষিণ দিক থেকে আসা মৌসুমি বায়ু এসে লঘুচাপের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়ে তখন বৃষ্টি হয়। এ সময় লঘুচাপ এক থেকে দুই দিন স্থির হয়ে থাকতে পারে। এক জায়গায় থাকার ফলে যে জায়গায় থাকবে সেখানে বৃষ্টি বেশি হবে। আগের বছরগুলোর বৃষ্টিপাতের হিসাব দেখলে দেখা যাবে যে এই সময়টাতেই বৃষ্টি বেশি হয় দেশের উত্তরাঞ্চলে বা ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা অঞ্চলে। সব মিলিয়ে এ বছর অক্টোবরে বৃষ্টি বেশি হলেও বৃষ্টিপাতের এই প্রক্রিয়াটা অস্বাভাবিক নয়।

চলতি বছরের অক্টবরের এই অস্বাভাবিক বৃষ্টির পেছনে এল নিনো ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নেরও কিছুটা ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করেন এই আবহাওয়া ও জলবাবায়ু গবেষক। তিনি বলেন, ‘এল নিনো সক্রিয় থাকায় আমাদের এই অঞ্চলের তাপমাত্রা কিছুটা বেশি ও উষ্ণ অবস্থায় থাকে এবং এবং আবহাওয়ার চরম ঘটনা বেড়ে যায়। এ অস্বাভাবিক বৃষ্টির পেছনে এর কিছুটা ভূমিকা থাকতে পারে। ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হওয়া অবশ্যই অস্বাভাবিক। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে গত এক বছরে আমরা প্রতি মাসেই কিছু না কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা দেখেছি।’

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!