বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার এক গভীর চক্রান্ত চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজও বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার এক গভীর চক্রান্ত চলছে। লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার অপতৎপরতা এখনও বিদ্যমান। সকল ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত প্রতিহত করে মাতৃভূমির স্বাধীনতা সুরক্ষা এবং গণতন্ত্রের নুয়ে পড়া পতাকাকে সমুন্নত রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এজন্য গড়ে তুলতে হবে সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শোষিত জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে আমি আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ এ জাতি শুরু থেকেই অধিকার আদায়ের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। ১৯৭১ সালে যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দেশের মানুষ স্বাধীনতাযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল-তা আজও পূরণ হয়নি। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য আজও দেশি-বিদেশী চক্রান্তকারীরা নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনকে চিরদিনের জন্য নির্বাসিত করার মাধ্যমে জনগণকে চুড়ান্তভাবে ক্ষমতাহীন করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদের চরম উত্থানে দেশে অরাজকতা কায়েম করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত দিয়ে তা বারবার বিপন্ন করতে চেষ্টা করেছে চক্রান্তকারীরা।
কিন্তু আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিপন্ন গণতন্ত্রকে বারবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার করেছেন, সেটিও আজকে ধ্বংস করে গণতন্ত্রের নামে কতৃর্ত্ববাদী ফ্যাসিবাদ চালু করা হয়েছে। গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চক্রান্তমূলকভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের অপার সম্ভাবনাময় নেতা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গুম, হত্যা, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্য দিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষকে অমানবিক হয়রানী করা হচ্ছে। রাষ্ট্রকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। নজীরবিহীন দুর্নীতি, সীমাহীন নির্যাতন ও দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। তাই আজকের এই মহান দিনে বাংলাদেশের সকল দেশপ্রেমিক মানুষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি-দলমত নির্বিশেষে ইস্পাতদৃঢ় ঐক্যের মাধ্যমে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলে এই দেশবিরোধী- গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে অপসারিত করে জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য। সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক ন্যায়বিচারের মাধ্যমে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আমি দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশীসহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। কামনা করি তাদের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি। আজকের এই মহান দিবসে আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই সকল জাতীয় নেতার প্রতি, যারা দেশ ও জাতির জন্য অসামান্য অবদান রেখেছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম