সাতক্ষীরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একই পরিবারের তিন সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। রোববার (৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিষাখালি ভূমিহীন জনপদে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, দেবহাটা উপজেলার খলিষাখালির চালতেতলা ঢালীপাড়ার মৃত মহফেজ ঢালীর ছেলে ছমিরউদ্দিন ঢালী (৬৫), তার ছেলে রফিকুল ঢালী (৩৪) ও আশাশুনি উপজেলার শালখালি গ্রামের এন্তাজ গাজীর ছেলে ও আহত ছমিরউদ্দিন ঢালীর ভাগ্নে ইউসুফ গাজী (২৫)।
খলিষাখালি শেখ মুজিবনগর ভূমিহীন আবাসন প্রকল্পের উপদেষ্টা চলতেতলা এলাকার গোলাপ ঢালী জানান, ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে সাপমারা খালপারের উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীনসহ বিভিন্ন এলাকার সাত শতাধিক ভূমিহীন পরিবার খলিষাখালি বিলে বসবাস করে আসছে। সম্প্রতি বাবুরাবাদের রুহুল আমিনের ছেলে হত্যা, গুম, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলাসহ কমপক্ষে ১০টি মামলার পলাতক আসামী আকরাম হোসেন, ইসমাইল মেম্বর কালু ডাকাতের নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা খলিষাখালি শেখ মুজিবনগর ভূমিহীন আবাসন প্রকল্পের সভাপতি আনারুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলামের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় গত ৩ অক্টোবর আনারুল ও রবিউলকে হত্যার হুমকি দিয়ে সশস্ত্র মিছিল করে তারা।
এর প্রতিবাদ করায় খলিষাখালির চরের মুক্তিযোদ্ধা গহর গাজীর ছেলে লুৎফর গাজীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। এ সময় তাদের বিরোধিতাকারি ভূমিহীন নেতা ও ভূমিহীনদের চিংড়ি ঘের দখল করে নেয় তারা। এরপর থেকে রবিউল ও আনারুলসহ তাদের কয়েকজন সমর্থক আত্মগোপন করায় ওই সন্ত্রাসী গ্রুপটি ভূমিহীনদের পরিবারের কাছে প্লট পিছু এক হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল।
তিনি আরো বলেন, রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই সন্ত্রাসী গ্রুপটি তার বাড়িতে আসে। এ সময় তারা ফের ২০ লাখ টাকার অংশ হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে। দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যেতে চাইলে ভাই ছমিরউদ্দিন ঢালী, ভাইপো রফিকুল ঢালী ও ভাগ্নে ইউসুফ বাধা দেয়। হামলাকারিরা এসময় তাদের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। মারাত্মক জখম তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ছমিরউদ্দিন ও রফিকুলকে খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ সোমা দাস জানান, ছমিরউদ্দিন, রফিকুল ও ইউসুফের শরীরের মাথা, গলা, হাত ও বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভারী জিনিস ও ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ছমিরউদ্দিন ও রফিকুলকে খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ ওবায়দুল্লাহ জানান, এ নিয়ে রোববার বিকাল পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এসজেড