দেবহাটায় অস্ত্র ও গুলি মামলায় ব্যবসায়ী ইউনুস আলীর রিমান্ড নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার(৯ নভেম্বর) সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক বণ্যা খাতুন শুনানী শেষে এ নির্দেশ প্রদান করেন।
ব্যবসায়ী হলেন, ইউনুস আলী মোড়ল। তিনি উপজেলার নোড়ারচক গ্রামের ইয়াদ আলী মোড়লের ছেলে।
ব্যবসায়ী ইউনুস আলীর পক্ষে রিমান্ড শুনানীকালে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২) জানান, গত ৩ নভেম্বর বৃহষ্পতিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে দেবহাটার নোড়ারচকের ব্যবসায়ি ইউনুস আলীকে আইন বহির্ভুতভাবে আশাশুনির বদরতলার মাছের সেট থেকে জোর করে তুলে আনা হয়। পরে দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়ার জেলেপাড়া এলাকার ইনজামামুল হকের অয়ন ব্রিকস এর সামনে থেকে একটি ওয়ান শুটার গান ও দুটি গুলিসহ ইউনুস আলীকে আটক দেখিয়ে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের (১৯/এ) ধারায় মামলা দিয়ে ওইদিন বিকেলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেবহাটা থানার উপপরিদর্শক হাফিজুর রহমান কোন কারণ ছাড়াই এ মামলায় ইউনুসকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন জানান।
আদালতে রিমান্ড শুনানীকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক হাফিজুর রহমান বলেন, খলিষাখালি ভূমিহীনজনপদে এ অস্ত্র ব্যবহারের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
অ্যাড. জিয়াউর রহমান, অহেদ আলীসহ কয়েকজন আইনজীবী জানান, অ্যাড. আব্দুল মজিদ এ সময় বদরতলা বাজারের বৃহষ্পতিবারের একটি সিসি টিভি ফুটেজ বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ভিডিও ফুটেজে পুলিশ বদরতলা মাছের সেট থেকে কিভাবে ব্যবসায়ী ইউনুস আলীকে ধরে মোটর সাইকেলের মাঝখানে বসিয়ে পারুলিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা দেখান। আশাশুনি থানার অনুমতি ছাড়াই বদরতলায় ঢুকে দেবহাটা থানা পুলিশের অভিযান চালানো বেআইনি বলে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অ্যাড. আব্দুল মজিদ। আদালতে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আসামের রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
মাছ ব্যবসায়ী ইউনুস আলী বুধবার আদালতের বারান্দায় উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, আইডিয়ালের পরিচালক পশু চিকিৎসক ডাঃ নজরুল ইসলামের মালিকানা দাবিদার খলিষাখালি বিলের ৩০ বিঘা ও সাবেক চেয়ারম্যানের ছেলে মাসুদের ৮০ বিঘা জমি লীজ নিয়ে তিনি ও উপজেলা যুবলীগ নেতা মিন্নুর রহমান মাছ চাষ করে আসছিলেন। ডাঃ নজরুল ইসলাম, কাজী গোলাম ওয়ারেশ, মাসুদসহ জমির মালক দাবিবাররা সাতক্ষীরার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালত ও মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে হেরে যাওয়ায় জেলা প্রশাসককে ১৩২০ বিঘা জমি নিয়ন্ত্রণে নিতে বলায় সরকারি জমি হিসেবে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ভূমিহীনরাি ওই জমি দখলে নেয়।
এরপর থেকে তিনি ও যুবলীগ নেতা মিন্নুর ডাঃ নজরুল ইসলাম ও মাসুদের কাছে হারির টাকা ফেরৎ চেয়ে আসছিলেন। টাকা দেওয়ার নাম করে লীজ দাতারা নানাভাবে টালবাহানা করে আসছিলেন। গত ৪ নভেম্বর টাকা ফেরৎ দেওয়ার জন্য শেষ সময় নিয়েছিলেন নজরুল ইসলাম ও মাসুদ। টাকা না দেয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তাকে বদরতলা মাসের সেট থেকে তুলে এনে পুলিশ পারুলিয়ার জেলেপাড়ার ইনজামামুল হকের ইটভাটার সামনে থেকে ওয়ার শুটার গান ও দুই রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলে পাঠায়। একইভাবে তাকে হয়রানির জন্য পুলিশ আদালতে রিমান্ডের আবেদন করেছিল।