জীবদ্দশায় কি দেখে যেতে পারব বয়স্ক ভাতার কার্ড। ভোটের সময় কত মানুষ আশ্বাস দিল। কিন্তু কেউই কিছুই দিল না। আর কত বয়স হলে পাব বয়স্ক ভাতা?। এ কথাগুলো বললেন, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের পাঠামারা গ্রামের ৮৬ বছর বয়সি আব্দুল ছত্তার শেখ। জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ রয়েছে ১২ আগষ্ট ১৯৩৭।
১০ বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও সুবিধার আওতায় আসেনি বৃদ্ধা ছত্তার শেখের বয়স্ক ভাতার কার্ড। সংশ্লিষ্ট ৭নং ওয়ার্ড মেম্বর মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেছেন, অপেক্ষায় থাকেন, যদি কোন ব্যক্তি মারা যায় তখন সেই ভাতা বইয়ে আপনার নাম ঢুকানো হবে।
৫ এপ্রিল বুধবার সকাল ১১টায় বৃদ্ধ আব্দুল ছত্তার শেখ (৮৬) মোরেলগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে সংবাদকর্মীদের কাছে মনের ক্ষোভ ও দুঃখের অনেক কথা বলতে গিয়ে চোঁখের পানি অঝরে ঝঁরছিলো। ছোট বেলা থেকেই জীবন জীবিকার তাগিদে সাগরে মাছ ধরাই ছিল তার পেশা। ৩০ বছর ধরে সাগরে কাটিয়েছি। জাল, নৌকা, ট্রলার সাগরে ডাকাতরা তুলে নিয়ে নিঃস্ব করে দিয়েছে। পিতাও পেশায় ছিলেন জেলে। এখন বৃদ্ধ বয়সে বাড়িতে সময় কাটছে। ৪ ছেলে ৫ মেয়ে বিবাহ করে সকলেরই আলাদা সংসার। স্ত্রী ছবুর জান বিবি (৭০) সেও ভাতার আওতায় আসেনি। ২০১৩ সালে একবার পরিষদে মেম্বরের মাধ্যমে আবেদন জমা দিয়েছি। হয়নি ভাতা কার্ড। সর্বশেষ শতভাগ ভাতার আওতায় ১ নভেম্বর ২০২২ সালে যাচাই বাছাই আবেদনে ১ নম্বর তালিকায় নাম এবং টিএনও স্যারের সুপারিশসহ কাগজ জমা দিলেও ভাগ্যে জেটেনি বয়স্ক ভাতা। কি হলে বয়স্ক ভাতা পাবো? মেম্বার বলেছে কাগজপত্র ঠিকমত গেছে অফিস থেকে বাদ পড়েছে। আমরা কি করব? দেখেন কোন লোক মারা যায় নাকি তাহলে সেই ব্যক্তির কার্ড এনে আপনাকে দ্রুত দেওয়া যাবে।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, আব্দুল ছত্তার শেখ ও তার ছোট ভাই নূর ইসলাম শেখ (৬৯) বয়স্ক ভাতার আবেদন দু’টি অফিসে পাঠানো হয়েছিলো। ছোট ভাইয়ের আবেদনের ভাতার বই হয়েছে। ওনারটা বাদ পড়েছে। বুঝেনতো সমাজ সেবা অফিসে উল্টা পাল্টা।
এ বিষয়ে হোগলাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আকরামুজ্জামান বলেন, আব্দুল ছত্তার শেখ নামে কোন বয়স্ক ভাতার আবেদন আসেনি। নির্বাহী কর্মকর্তার সুপারিশ সহকারে সেটি বাদ পড়ার প্রশ্নই আসেনা। তার ইউনিয়নে প্রায় ১২ শ” বয়স্ক ভাতার সুবিধার আওতায় রয়েছে।
এ সর্ম্পকে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরকারিভাবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৪১ জন সুবিধাভোগী বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন। তবে, ৩ বছর ধরে নতুন করে ভাতার তালিকা বন্ধ রয়েছে। মৃত. ব্যক্তির ভাতা বই পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে’।
খুলনা গেজেট/ এসজেড