খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

দুর্দান্ত জয়ে প্রেসিডেন্টস কাপ চ্যাম্পিয়ন মাহমুদউল্লাহর দল

রাউন্ড রবিন লিগের দুই ম্যাচে নাজমুল একাদশের বিপক্ষে পাত্তাই পায়নি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একাদশ। দুই ম্যাচেই সহজ জয় পেয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ফলে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচেও ফেবারিট ছিল তারা। কিন্তু শেষ ম্যাচে এসেই যেনো সবকিছুর হিসাব কড়ায়-গণ্ডায় ফিরিয়ে দিলো মাহমুদউল্লাহ একাদশ। নাজমুল-মুশফিকদের সহজেই হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে মাহমুদউল্লাহর দল।

ফাইনাল ম্যাচটি একপেশে করে ফেলার মূল কারিগর পেসার সুমন খান ও স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান লিটন দাস। প্রথমে বল হাতে আগুন ঝরিয়েছেন সুমন, একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন নাজমুল একাদশের ব্যাটিং লাইনআপ, মাত্র ৩৮ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। পরে ছোট লক্ষ্যে শৈল্পিক ব্যাটিংয়ের পসরা সাজান লিটন, দর্শনীয় সব শটে ১০ চারের মারে খেলেন ৬৯ বলে ৬৮ রানের ইনিংস।

সুমন-লিটনের নৈপুণ্যে ২০.২ ওভার তথা ১২২ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। আগে ব্যাট করে মাত্র ১৭৩ রানে অলআউট হয়েছিল নাজমুল একাদশ। জবাবে লিটনের পর ফিফটি করেন ইমরুল কায়েসও। নাঈম হাসানের বোলিংয়ে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে দলের শিরোপা নিশ্চিত করেছেন ইমরুল।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি মাহমুদউল্লাহদের। ওপেনার মুমিনুল ৪ রানে আল-আমিনের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে নাসুমের হাতে ক্যাচ দেন। মাহমুদুল হাসানকে নিয়ে লিটন দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নেন। দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৪৮ রান। যেখানে মাহমুদুলের অবদান ১৮ রান। স্পিনার নাসুম আহমেদের বল ক্রস করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন তরুণ মাহমুদুল।

পুরো টুর্নামেন্টে রান না পাওয়া লিটন ফাইনালে জ্বলে ওঠেন। উইকেটের চারপাশে দারুণ সব শট খেলে প্রতিপক্ষের বোলারদের নাড়িয়ে দেন। কোনও বোলারকেই থিতু হতে দেননি তিনি। ৪৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর বড় ইনিংস গড়ার পথেই ছিলেন ডানহাতি ওপেনার। কিন্তু ভুল শটে শেষ তার প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংস। নাসুমকে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ঈমনের হাতে ক্যাচ দেন ৬৮ রানে। ৬৯ বলে ১০ চারে সাজান নিজের ইনিংসটি।

পরের গল্পটা ইমরুল ও মাহমুদউল্লাহর। নিজের ১২তম বলে প্রথম রান নেওয়া ইমরুল ঝড় তোলেন থিতু হয়ে। ২২ গজে নামে ছক্কা বৃষ্টি। ৫৫ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি ছক্কা ও ১টি চার। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও কম যাননি। ১১ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২৩ রান। দুইজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি ছিল ২১ বলে ৪৮ রানের।

ইনিংসের শুরুতে লিটনের দায়িত্বশীল ইনিংস, মাঝে ইমরুলের ঝড়ো আক্রমণ ও শেষটায় মাহমুদউল্লাহর দৃঢ়চেতা ইনিংসে সহজেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলেন মাহমুদউল্লাহরা।

এর আগে প্রথম ইনিংসে সব আলো ছিল রুবেল হোসেনের ওপর। কিন্তু সুমন খান কেড়ে নেন সব। মাহমুদউল্লাহ একাদশের এই পেসার আগুনে বোলিংয়ে নেন ৫ উইকেট। তাতে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনালে পুড়ে ছাই নাজমুল একাদশ। এদিন রুবেলও হতাশ করেননি। ডানহাতি এ পেসার উইকেট নিয়েছেন দুটি।এছাড়া ইবাদত, মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ পেয়েছেন একটি করে উইকেট।

নাজমুলদের ইনিংস তিন অঙ্ক ছুঁতে সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ইরফান শুক্কুরের। ইনিংসের প্রায় অর্ধেক রানই এসেছে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাটে। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান করেন ৭৫ রান। বাকি ৯ ব্যাটসম্যান করেন ৯৮। ৭৭ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ইরফান তার ইনিংসটি সাজান।

৬৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর তৌহিদ হৃদয় ও ইরফান জুটি গড়েন। ৮২ বলে ৭০ রানের জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন তারা। হৃদয় ২৬ রানে ফিরলে একা হয়ে পড়েন ইরফান। শেষ দিকে আগ্রাসন দেখিয়ে একাই রান তোলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত তার উইকেটটি নেন রুবেল। ডানহাতি পেসারকে উড়াতে গিয়ে বল মিস করে বোল্ড হন ইরফান।

এর আগে নাজমুল একাদশের টপ অর্ডারে সবাই ছিলেন ব্যর্থতার মিছিলে। সাইফ হাসান (৪), সৌম্য সরকার (৫), নাজমুল হোসেন শান্ত (৩২), মুশফিকুর রহিম (১২) ও আফিফ হোসেন ধ্রুব (০) দ্রুত সাজঘরে ফেরেন।

ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন সুমন খান। টুর্নামেন্ট সেরা মুশফিকুর রহিম। রুবেল হোসেন পেয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা বোলারের পুরস্কার। সেরা ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর।

খুলনা গেজেট/এএমআর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!