মৎস্য ভাণ্ডার বলে খ্যাত বঙ্গোপসাগরের দুবলারচর ও সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রার শুটকীতে কীটনাশক ব্যবহার হয়েছে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে রোদের অনুপস্থিতিতে শুটকী বাঁচাতে মহাজন ও বহারদাররা এন্ডোসালফান সালফেট নামক কীটনাশক ব্যবহার করে। এটি মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ অপদ্রব্য এড়াতে নানা কৌশল প্রয়োগ করতে পরামর্শ দিয়েছে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এক গবেষণায় বলেছে, দুবলারচর, কক্সবাজার ও চলনবিলের শুটকীতে ২৬০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। দুবলারচরের শুটকী ৮৭ শতাংশ কীটনাশক মুক্ত। ১৩ শতাংশের মধ্যে কীটনাশকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত দুবলার চরে শুটকী মৌসুম। পার্শ্ববর্তী মেহের আলীর চরেও মাছ শুকানো হয়। মৌসুমে ২০ হাজার জেলে মাছ আহরণ ও শুকানোর কাজে নিয়োজিত ছিল। কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ও মহেশ্বরীপুরে স্থানীয় নদীর মাছ শুকানো হয়।শাকবাড়িয়া নদীর চিংড়ি শুকাতে সুন্দরবনের কাঠ ব্যবহার হয়। সাগর সংলগ্ন আলোর কোলে শৈত্যপ্রবাহের সময় রোদের দেখা পাওয়া যায় না। সাগর থেকে আহরিত লটকী, চান্দা ও চিংড়ি পঁচনের কবল থেকে রক্ষা করতে জেলেরা কীটনাশক স্প্রে করে। এতে মশা-মাছির বংশ বিনষ্ট হয় এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা পায়। শুটকী পঁচার সম্ভাবনা না থাকায় জেলেরা এ অপদ্রব্য ব্যবহার করে। সাগর থেকে সপ্তাহে একবার শুটকীর চালান নতুন বাজারে আসে। সেখান থেকে নগরীর বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ হয়।
জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. মোকলেছৃুর রহমান জানান, জেলেরা প্রশিক্ষিত না হওয়ায় মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে। শুটকী রান্না করলে জীবানু নষ্ট হলেও কীটনাশকের মাত্রা কমে যায় না। শুটকী পঁচনের কবল থেকে রক্ষা করতে কীটনাশক ব্যবহার না করে গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ৬৫ জেলেকে বিভিন্ন কৌশলের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কৌশল সম্পর্কে অবহিত হন।
দুবলার চরের বহরদার আব্দুল মান্নান গাইন জানান, শুষ্ক মৌসুম থাকায় রৌদ্রের তীব্রতা থাকে। এ জন্য কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। যখন সূর্যের তাপ থাকে না শুটকীকে পঁচনের কবল থেকে রক্ষা করতে অল্প-স্বল্প কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
খুলনা গেজেট/এএজে