দীর্ঘ ২১ বছর পর আগামীকাল রবিবার (১৬ জানুয়ারি) যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর মাত্র এক দিন পরেই সাধারণ ভোটারদের রায়ে নির্বাচিত হবেন আগামী ৫ বছরের জন্য পৌর মেয়র। নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার পর থেকে সকল প্রার্থী উৎসব মূখর পরিবেশে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। ১৮ দিন ধরে চলা প্রচার-প্রচারণার শেষদিন ছিল গতকাল শুক্রবার।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, মেয়র পদে ৬ জন, কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন, ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে পৌরসভার ২৫ হাজার ৯৯৪ জন ভোটার রয়েছেন। এই পৌরসভার ৯টি ওর্য়াডের ১৪টি ভোট কেন্দ্রের সবগুলোতেই ভোট নেওয়া হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাওয়ায় কৌতুহল দেখা গেছে ভোটারদের মধ্যে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের পাশাপাশি স্বতন্ত্রে বিএনপি ও বিদ্রোহী হিসেবে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালের পাশাপাশি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক একেএম আমানুল কাদির টুল্লু নারিকেল গাছ প্রতীকে, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ন-আহবায়ক ছেলিমুল হক সালাম জগ প্রতীকে ও যুবলীগ কর্মী ইমতিয়াজ আহমেদ শিপন মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ দিকে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে কম্পিউটার প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক ইমরান হাসান সামাদ (নিপুণ)। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী উদ্ভাবক আব্দুল্লাহ আল সাঈদ রেল ইঞ্জিন প্রতীকে নির্বাচন করছেন। আগামীকাল রবিবারের (১৬ জানুয়ারি) ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটাররাও চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তাদের আগামী ৫ বছরের জন্য প্রার্থী নির্বচিত করবেন।
আজ শনিবার সকালে পৌরসদরের ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে সরেজমিনে ঘুরে কয়েকজন ভোটারের কাছে জানতে চাইলে এবারকার ভোটে বেশিরভাগ ভোটারই নতুন জনপ্রতিনিধির প্রত্যাশা করছেন। সুষ্ট ও নিরপেক্ষ ভোট হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কম্পিউটার প্রতীক ইমরান হাসান সামাদ (নিপুণ) ও একেএম আমানুল কাদির টুল্লু খেজুরগাছ প্রতীক।
বিশৃংখলা করার কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাচন অফিসার অপূর্ব কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, ঝিকরগাছা পৌরসভা নির্বাচন শতভাগ অবাধ, সুষ্ট ও নিরপেক্ষ করতে ৯টি ওয়ার্ডে ভ্রাম্যমান আদালতের জন্য ৯জন ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব, বিজিবি, পুলিশসহ পর্যাপ্ত আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।
ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত জানিয়েছেন, সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের জন্য ৯টি ওর্য়াড কেন্দ্রে ৯ জন ইন্সপেক্টরসহ ৪ শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন।
উল্লেখ্য, ঝিকরগাছা উপজেলা শহরকে ১৯৯৮ সালের ৪ এপ্রিল ৩য় শ্রেণীর পৌরসভা হিসাবে ঘোষণা হয়। তার প্রায় ৩ বছর পর ২০০১ সালের ৪ এপ্রিল পৌরসভার ১ম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বর্তমানে ২১ বছর পার হলেও ২য় শ্রেণীতে উন্নীত হওয়া পৌরসভার আর কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
খুলনা গেজেট/ এস আই