খুলনার দাকোপ উপজেলার প্রায় ১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দাতব্য চিকিৎসলায়টি প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখলদাররা ওই প্রতিষ্ঠানের জায়গাটি দখলে নিয়ে ভাড়া দিয়ে টাকা আদায় করছে।
চিকিৎসলায়টি পুনরায় চালু ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের মাধ্যমে ফেরত চেয়ে মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার (২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দাতব্য চিকিৎসলায়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপি এই মানববন্ধন করেন দাকোপবাসী।
উপজেলার লাউডোব ইউনিয়নের খুটাখালি বাজারে সচেতন দাকোপবাসীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কিশোর-তরুণসহ নানা বয়সের মানুষ অংশ নেন। এ সময় তারা প্রতিষ্ঠানটি দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করে পূনসংস্কার করার দাবিও জানায়। এতে সভাপতিত্ব করেন সমাজসেবক চন্দন ঢালী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১৮৭০ সালের নির্মিত খুটাখালি পশ্চিমপাড়া দাতব্য চিকিৎসলায়টি সংস্কার না করে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা দখল করে নেয়। পরে ওই স্থানে ভবন নির্মাণ করে নিজেদের মতো ঘর ভাড়া দিয়ে টাকা আদায় করছে। এতে কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে ঐতিহ্যবহনকারি এ প্রতিষ্ঠানটি। স্বাস্থ্যব্যবস্থার এই প্রতিষ্ঠানটির জায়গায় দখলদাররা ইট ও বালু তুলে বিক্রি করছে। যা নেক্কারজনক বলে আখ্যায়িত করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৩ নম্বর পোল্ডারের আওতায় ১৫০ বছর আগে পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যখানে নির্মিত দাতব্য চিকিৎসলায়টি প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। তৎকালিন সময়ে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতেন। কিন্তু সেটি এখন আর চালু না থাকায় সেবার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বক্তারা, দাতব্য চিকিৎসলায়টি দখলমুক্ত করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের উপযোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে সেবা নিশ্চিতকরণের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হলে হতদরিদ্র মানুষেরা এখান থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে। এর জন্য একজন দক্ষ সরকারি চিকিৎসকও নিয়োগের দাবি জানান তাঁরা।
এতে অংশ নেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নিহার রঞ্জণ মৃধা, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মানষ মুকুল রায়, সমাজসেবক কালিপদ বিশ্বাস, প্রভাষক ধ্রুব শংকর রায়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য তপন রায়, দ্য ভয়েজ অব দাকোপের সহসভাপতি অরুনাভ রায়, নারীনেত্রী রীতা সরকার, তপু সরকার ও ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত রায় প্রমূখ।
মানববন্ধন শেষে দাবত্য চিকিৎসলায়টি ফিরে পাওয়ার জন্য তারা গণস্বাক্ষর নেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করতে পাঁচদফা দাবি-সম্বলিত একটি স্বারকলিপি প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি রঘুনাথ রায় মুঠোফোনে খুলনা গেজেটকে বলেন, চিকিৎসলায়টি চালু রয়েছে। সেখানে দুজন ডাক্তার স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। তিনি দাবি করে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি কারোর দখলে নেই। যেখানে সেবা দেয়া হচ্ছে, তারপাশে ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ওই ভাড়ার টাকা থেকে দুজন চিকিৎসককে বেতন-ভাতা দেন বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট / এআর