স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সুন্দরবনের জলে, স্থলে, বনে কোথাও আর দস্যুতা করতে দেওয়া হবে না। সুন্দরবনে দস্যুতারোধে র্যাবের স্থায়ী ক্যাম্প নির্মাণ করা হবে। প্রয়োজনে কোস্টগার্ডসহ অন্যান্য বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করা হবে। দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে সোমবার বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের পুনর্বাসন করতে ঘর, মুদিদোকান, নৌকা ও জালসহ গবাদিপশু হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রদান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, বনদস্যুদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সুন্দরবনের দীর্ঘ দিনের দস্যুতার শেষ হয়েছে। আর দস্যুদের ভাল রাখার জন্য আমরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছি। এরা যাতে আর কখনও বিপথে যেতে না পারে সে জন্য নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে।এছাড়া দস্যুদের মামলার বিষয়ে আমাদের যে আশ্বাস দেওয়া ছিল সেটাও বাস্তবায়ন করা হবে। ধর্ষণ ও হত্যা ছাড়া অন্যান্য সব মামলা পর্যায়ক্রমে আমরা প্রত্যাহার করে নিব। আপনারা অন্য কোন কিছু ভাববেন না।
তিনি আরও বলেন, যদিও আমি বিশ্বাস করিনা, তবে শুনছি আপনারা যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তারা আবার একটু অন্য চিন্তা ভাবনা করছেন, দয়া করে করবেন না। কষ্ট হচ্ছে, কষ্ট করছেন শুনেছি। আপনাদের জীবিকার জন্য সরকার পাশে আছে। আমরা আপনাদেরকে ভুলিনি। যদি কেউ আবার বিপথে যায়, তার জন্য কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন এদেশ হবে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ। তবে দুর্গাপূজার সময়ে গুজব তৈরি করে একটি অস্থিতিকর অবস্থার সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো একটা বিশেষ মহল। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় তাদের সেই আশা পূরণ হয়নি। যারা চিন্তা ও মনে করেন এদেশে অস্থিরতা বৃদ্ধি করে আপনারা সফল হবেন সে গুড়ে বালি। এদেশকে নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবেনা। এ শান্তির দেশে কোনভাবেই অরাজকতা সৃষ্টি করতে দেয়া হবেনা।।
আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের পুনর্বাসন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ সামসুল হক টুকু, এমপি, সদস্য পীর ফজলার রহমান, খুলনা ২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজির আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কে এম আজাদ।
এদিন, ১০২ টি ঘর, ৯০ টি মুদিদোকান (মালামালসহ), ১২টি জাল ও মাছ ধরার নৌকা, আটটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা এবং ২২৮ টি গবাদিপশু (বাছুরসহ) প্রদান করা হয় স্বাভাবিক জীবনে ফেরা দস্যুদের মধ্যে।
২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে ‘দস্যুমুক্ত সুন্দরবন’ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই হিসেবে আজ ‘দস্যুমুক্ত সুন্দরবন’র তৃতীয় বর্ষপূর্তি।
খুলনা গেজেট/ টি আই