ছয় মাস কারাবন্দী থাকার পর ১৮ ফেব্রুয়ারি (রোববার) মুক্তি পেয়েছেন থাইল্যান্ডের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা (৭৪)। সকালের দিকে ব্যাংককের পুলিশ জেনারেল হসপিটাল থেকে একটি গাড়িতে করে তাকে বের হতে দেখা যায়। এ সময়ে তার মুখে ছিল সার্জিক্যাল মাস্ক এবং গলায় পরানো ছিলো নেক ব্রেস। খবর: আল জাজিরা’র।
হাসপাতাল থেকে পশ্চিম ব্যাংককে নিজের বাড়িতে ফিরে যান থাকসিন। তাকে অভিনন্দন জানাতে বাড়ির ফটকে ব্যানার ঝোলানো হয়।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সেরেথা থাভাইসিন জানিয়েছিলেন, দুর্নীতির মামলায় থাকসিনের আট বছরের সাজা হলেও সে দেশের রাজা এই সাজা কমিয়ে এক বছরে নামিয়ে আনেন। এরপর তাকে প্যারোলে আজ রোববার মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন থাভাইসিন।
ঠিক কী পরিস্থিতিতে থাকসিনকে মুক্তি দেওয়া হলো এ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক দল ফিউ থাইয়ের সাথে দেশের অন্য দুটি দলের জোট গঠন হওয়ার পর গুজব রটেছে, কারাগারে থাকা অবস্থায় হয়তো থাকসিনের সাথে সরকার কোনো একটি সমঝোতায় এসেছে। সরকার অবশ্য এমন গুজব স্বীকার করেনি।
২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত থাইল্যান্ডের ক্ষমতায় ছিলেন থাকসিন। এরপর এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সে সময় থেকেই দেশের বাইরে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন দীর্ঘ ১৫ বছর।
তবে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে চলে যাবার পরেও তার দল থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে গেছে। তার বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০১১-১৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।
এরই মধ্যে থাকসিনের অনুপস্থিতিতেই সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে চারটি মামলায় ১২ বছরের কারাদণ্ড দেন। পরে আদালতের রায়ের ওপর থাইল্যান্ডের রাজা তার দণ্ড কমিয়ে দেন।
গত বছরের ২২ আগস্ট সিঙ্গাপুরে ১৫ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে ব্যক্তিগত বিমানে করে থাইল্যান্ডের ডন মুয়াং বিমানবন্দরে অবতরণ করেন থাকসিন। পরে বিমানবন্দর থেকে আগের দণ্ডাদেশ থাকায় আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে নেওয়া হয়। কারাগারে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই থাকসিনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এদিকে এ খবর পাওয়ার সপ্তাহ দুয়েক আগেই থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্র নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে অভিযুক্ত করে পুলিশ। ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানের সময় এক সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তবে মামলাটি এগিয়ে যাবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
খুলনা গেজেট/এনএম