১৯৭৪ গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম শিক্ষা কমিশন কুদরত-এ-খুদাতে খুলনায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। যেটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিটি বিভাগে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মনোভাবেরই প্রতিফলন। তাছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য এ অঞ্চলের মানুষের আশা আকাঙ্খা ও সংগ্রাম। বিশেষ করে খুলনাবাসীর আন্দোলন সংগ্রামেরই প্রতিফলন আজকের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
এক এক করে আজ ত্রিশ বছরের পূর্ণ টগবগে যুবকে পরিণত হয়েছে। ৪ জানুয়ারি, ১৯৮৭ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করে এবং ৩১ আগস্ট, ১৯৯১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। আর আনুষ্ঠানিকভাবে ২৫ নভেম্বর, ১৯৯১ সালে ৮০ জন শিক্ষার্থী এবং ৪ টি ডিসিপ্লিন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে। ২০০২ সাল থেকেই প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়।
বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছেন ৮ স্কুলের অধীনে ২৯ টি ডিসিপ্লিনে। একশ ছয় একরের এই জায়গাটির উপর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি নানাদিক থেকে অন্যন্য যেমন, বাংলাদেশের এটিই একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেটি একাত্তরের বধ্যভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত একটি অরাজনৈতিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে উজ্জ্বলতার সাক্ষর রাখছেন। পাশাপাশি শিক্ষকরাও তাদের গবেষণা কর্মে দেশের গন্ডি পেরিয়ে আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি অর্জন করে চলেছেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় নানাদিক থেকে অনন্য। যেমন প্রতি বছরের পহেলা জানুয়ারি ক্লাস শুরু হয়ে ত্রিশে ডিসেম্বর সেটি হয় শেষ হয়। কোনো ধরনের শিক্ষাজট ছাড়াই শিক্ষার্থীরা নিয়মিত রেজাল্ট পেয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে ২০ টিরও অধিক বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, যেখানে শিক্ষার্থীরা নানা রকম সাংস্কৃতিক চর্চার সাথে জড়িত। শিক্ষার ক্রমবর্ধমান প্রসারে বিশ্ববিদ্যালয়টির নানা উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে আরো এগিয়ে যাক আজকের দিনে এটিই প্রত্যাশা। তাই সমস্বরে বলি শিক্ষা নিয়ে গড়ব দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। জয় বাংলা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘজীবী হোক।
(লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিন)
খুলনা গেজেট/কেএম