তেরখাদা উপজেলার নাচুনিয়া জুনারি দাখিল মাদ্রাসায় ভবন নির্মাণে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে গাফিলতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টির পানিতে ফেলে রাখা মরিচা ধরা রড, ইট, পাথরসহ নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছেন তিনি।
সূত্রমতে, সিসি ঢালাইয়ে তিন ইঞ্চি কভারিং দেয়া হয়নি। নির্মাণ কাজের শুরুতেই ভিত্তিপ্রস্তরে প্রায় দুই হাজার স্কয়ার ফুট পানি কম কাটা হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর অনুপস্থিতিতে সিসি ঢালাই দেয়া হয়। এ সময়ে পরিমাণের তুলনায় কম রড ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
তিন কোটি ৬৩ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯ টাকা ব্যয়ের নির্মাণ কাজটির ভবিষ্যৎ স্থায়ীত্ব নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছেন এলাকাবাসীর। এরপর প্রকৌশলী শেখ নাসিম রেজা কর্মস্থল পরিদর্শনকালে ঠিকাদারকে গুণগত মানসম্পন্ন সামগ্রী ব্যবহার করতে নির্দেশ দিলেও কর্ণপাত করেননি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। রডের মরিচা অপসারণ করে অথবা নতুন রড ব্যবহারের নির্দেশ দেন।
নাচুনিয়া জুনারি দাখিল মাদ্রাসা সুপার মোঃ লিয়াকত আলী খান বলেন, ‘মাদ্রাসা একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান। এখানের কাজটি অন্তত যথাযথ গুণগত মান বজায় রাখা হোক। কাজটি এরকম অনিয়ম ও ঢিলেমি চলতে পারে না।’
স্থানীয় যুবলীগ নেতা হাবিবুল্লাহ্ পান্নু বলেন, ‘মাদ্রাসার ভবন নির্মাণে পুকুর চুরি হচ্ছে। মানহীন নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে দায়সারাগোচের কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।’
মাদ্রাসাটির সহকারী শিক্ষক শেখ ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘কাজটি নিম্নমানের। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয়রা একাধিকবার বসেছিলাম, কিন্তু সমস্যার সুরাহা হয়নি।’
উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান শারাফাত হোসেন মুক্তি নিম্নমানের কাজের বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গত ১৬ জুলাই ভবন নির্মাণ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রফিক এন্টারপ্রাইজের মোঃ রফিকুল ইসলাম। কাজটি কিনে নিয়ে নির্মাণ করছেন ঠিকাদার মোঃ জুলফিকার। অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় শিক্ষক বাবু আমার পেছনে লাগছে। স্থানীয় পান্নু ও আমার ভাগ্নে নজরুল খা মিলে এসব চক্রান্ত করছে। ওদের বিপদ আছে।’
খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে আমার নির্বাচনীয় এলাকায় কোন কাজ করা যাবে না। বিষয়টি শুনেছি; উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সাথে সাথে নির্দেশ দিয়েছি-এখনি কাজটি বন্ধ করতে।’
খুলনা গেজেট/এনএম