পল্লী বিদ্যুৎ প্রাপ্তিতে চরম বৈষম্যর স্বীকার হচ্ছেন তেরখাদা উপজেলাবাসী। যখন খুশি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে, আর যখন ইচ্ছা তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের স্থানীয় দায়িত্বশীলদের গাফিলতি আর খামখেয়ালিপনার কারণে উপজেলাবাসীর সাথে তারা যেন তামাশা শুরু করেছে বলে গ্রাহকদের এ অভিযোগ।
প্রচন্ড গরমে মানুষ অতিষ্ট, তার উপর বিদ্যুতের খামখেয়ালিপনার শিকার হয়ে মারাত্মক নাজাহাল হয়ে পড়েছেন খুলনা সেনেরবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধিনস্থ তেরখাদা উপজেলা জোনাল অফিসের আওতাধীন প্রায় ১৮-১৯ হাজার গ্রাহক। উপজেলার ইখড়ি এলাকাতে ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের উপকেন্দ্র চালু থাকলেও প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ৫/৬ বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে।
সম্প্রতি সকাল ভোররাত্রি থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৬/৭ বার পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়। সামান্য বৃষ্টির পানি পড়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ চলে যায় আর যে কখন আসে তা বলার কোন অবকাশ নেই। বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগেরও কোন উপায় নেই। অভিযোগ নম্বরে অভিযোগ করে ফোন দিলে তা অধিক সময় ব্যস্ত দেখায়। বিদ্যুৎ বিভাগের এ উদাসীনতার কারণে উপজেলাবাসীর অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে বিদ্যুতের এ অবস্থায় ব্যবসা বাণিজ্য যেমন ধ্বস নেমেছে, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াতো শিকেই উঠেছে। দিনের অর্ধেকের বেশী সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হলে অন্য সময় যেমন বিকেল, সন্ধ্যা বা রাতেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। পল্লী বিদ্যুতের স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগ, বরাবরই বিদ্যুৎ প্রাপ্তিতে বৈষম্যর শিকার তেরখাদা উপজেলাবাসী। স্কুল , কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে লোড শেডিং এর কারণে। ফলে অভিভাবক মহল দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে। অফিসপাড়ার কর্মকর্তা কর্মচারীদের জরুরী কর্মকান্ড করতে গিয়ে সময়ক্ষেপন হচ্ছে সাংবাদিকদের সংবাদ প্রেরণে দারুণ ভাবে বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। অবহেলিত এই জনপদে বিদ্যুত বিভ্রাটের কারনে জনজীবন থমকে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়ন ও উৎপাদনে সংশ্লষ্টদের বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অনেকেই জানান একটু জোরে বাতাশ হলে বা একটু জোরে বৃষ্টি হলেই তেরখাদা থেকে বিদ্যুৎ সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়।
এ নিয়ম চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। ফলে অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত তেরখাদা উপজলার মানুষ আধুনিকতার এই যুগে আরও এক ধাপ পিছিয়ে যাচ্ছে, এমই হতাশা তেরখাদা উপজেলার বিদ্যুৎ গ্রাহক ও সচেতন মহলের। এদিকে সারা বছর প্রায়ই মেইন লাইন সহ বিভিন্ন কাজের রক্ষনাবেক্ষনের অযুহাতে দিনভর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। সব মিলিয়ে তেরখাদা উপজেলাতে পল্লী বিদ্যুৎ আর্শিবাদ না হয়ে অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে।
তেরখাদা উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রের সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দিগেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়ায় বিদ্যুত লাইনে কাজ করার কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এম কে