তেরখাদা উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কাটেঙ্গা-গাজিরহাট রাস্তার চৌরাস্তা মোড়টি এখন জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগের স্থানে পরিণত হয়েছে। মোড়টির পাশে অবস্থিত স’মিলের সামনের অংশে সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে থাকে পানি। দীর্ঘ সময় ধরে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় এলাকা পরিণত হচ্ছে স্থায়ী জলাবদ্ধতায়। এতে করে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দা, দোকানদার,পথচারী এমনকি স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও।
এলাকার জলাবদ্ধতার মূল কারণ হিসেবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সড়কটি নিচু অবস্থানে রয়েছে, ড্রেনেজ ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অভাব এবং আশপাশে কোনো পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় বৃষ্টির পানি আটকে থাকে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যায়।পানির সঙ্গে কাদা মিশে সৃষ্ট হয় দুর্গন্ধযুক্ত পচা পানির স্তূপ, যা পারাপারে ভোগান্তির পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিও সৃষ্টি করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী রেজন মোল্লা বলেন, বৃষ্টি হলেই চলাচলে মারাত্মক সমস্যা হয়। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলে কাদা আর পচা পানি মাড়িয়ে যেতে হয়। ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না, অনেকেই কাদায় পিছলে পড়ে যায়। এমন অবস্থায় আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাপনই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় দোকানদার লালিম শেখ। তিনি বলেন, পানির কারণে ক্রেতারা দোকানে আসতে চান না। দোকানের সামনে সবসময়ই পচা পানি জমে থাকে, এতে ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে দোকান চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। বিশেষ করে রাতে এই মোড়টি হয়ে ওঠে আরও বিপজ্জনক। অন্ধকারে জমে থাকা পানিতে দিকনির্দেশনা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে করে মোটরসাইকেল, ইজি বাইক ও ভ্যান চালকরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এর আগেও একাধিকবার বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে কয়েকটি ছিল গুরুতর। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘসূত্রতা ও উদাসীনতার কারণে সমস্যাটি প্রতিনিয়ত আরও জটিল হয়ে উঠছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ভাস্কর মৃধা বলেন, আমরা এলাকাটি চিহ্নিত করেছি। অনুমোদন পেলে সড়কটি উঁচু করা এবং কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দূর করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে এলাকাবাসীর দাবি,বর্ষা মৌসুমে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। দেরি হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান না আসলে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি পানিবাহিত রোগের আশঙ্কাও বেড়ে যাবে।
খুলনা গেজেট/এএজে