সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ কয়েকটি সমমনা দলের ডাকা তৃতীয় দফার অবরোধ শুরু হয়েছে আজ বুধবার (৮ নভেম্বর) ভোর ছয়টা থেকে। তৃতীয় দফার এই অবরোধ কেমন চলছে? অবরোধ নিয়ে জাতীয় তিনটি মিডিয়ার প্রতিবেদন এখানে তুলে ধরা হল :
দৈনিক সমকাল অনলাইন জানিয়েছে, বিএনপির তৃতীয় দফায় ডাকা দুইদিনের অবরোধ চলছে। আজ বুধবার অবরোধের প্রথম দিন সকালে রাজধানী ঢাকার বাস টার্মিনালগুলো থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল প্রায় বন্ধ দেখা গেছে। তবে ঢাকার রাস্তায় কিছু যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম দেখা গেছে। মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় দূরপাল্লার বাসের জন্য যাত্রীদের চিরচেনা ভিড় দেখা যায়নি। কিছু কিছু এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। তবে ব্যক্তিগত যানবাহন খুবই কম দেখা গেছে। বিজয় সরণীতে অল্প কিছু যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
মানবজমিন অনলাইন জানিয়েছে, বিএনপি সহ সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকে তৃতীয় দফার সর্বাত্মক অবরোধ শুরু হয়েছে। আজ বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার এই কর্মসূচিতে সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দেয়া হয় দলগুলোর পক্ষ থেকে। বুধবার ভোর ৬টায় শুরু হওয়া অবরোধ চলবে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত। অবরোধে ছাড়ছে না দূরপাল্লার বাস।
বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীতে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি অন্য দিনের তুলনায় কম চলতে দেখা গেছে। সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে নিউ মার্কেট, কাঁটাবন মোড় ও পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও মোড়, ফার্মগেট, আগারগাঁও, শ্যামলী, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার এলাকায় গণপরিবহন খুব কম চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি ও রিকশা চলাচল করছে সড়কে। অন্যদিকে মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন সতর্ক অবস্থানে।
অন্যদিকে অবরোধে ছাড়ছে না দূরপাল্লার বাস। গাবতলী, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকেও আজ দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি। মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক মো. তারিকুল ইসলাম সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বলেন, যাত্রী শূন্য। সব বাস বসে আছে। যাত্রী না থাকলে শূন্য সিট নিয়ে বাস ছাড়া যাচ্ছে না। যদিও কাউটারগুলো খোলা রাখা হয়েছে।
এর বাইরে ফাঁকা রয়েছে গাবতলী বাস টার্মিনালও। নেই লোকজনের চলাচল। ছেড়ে যাচ্ছে না দূরপাল্লার কোনো বাস। অধিকাংশ কাউন্টারও বন্ধ। যাত্রী যদিও দু-একজন আসছেন, কিন্তু বাস না ছাড়ায় তারাও পড়েছেন বিপাকে। কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা এক প্রতিনিধি জানান, অবরোধ এলে যেমন যাত্রীর সংখ্যা কমে যায়, তেমনি ঝুঁকি বিবেচনায় মালিকরা গাড়ি ছাড়তে চায় না।
গাবতলী টার্মিনালের সৌদিয়া পরিবহনের প্রতিনিধি খুরশেদ আলম সকাল ১০টার দিকে বলেন, দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে না গাবতলী টার্মিনাল থেকে। যাত্রীর অভাবে বাস ছাড়ছে না তারা। মাগুরাগামী জেআর পরিবহণের কাউন্টার ম্যানেজার বলেন, অবরোধের কারণে যাত্রীও নেই, ফলে বাসও ছাড়া হয় না।
ঢাকা পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধের প্রথম দিন সকালে ফাঁকা দেখা গেছে গাবতলী বাস টার্মিনাল। সবসময় ‘জেগে থাকা’ গুরুত্বপূর্ণ এ টার্মিনালে সকালে লোকজনের তেমন একটা আনাগোনা নেই।
গাবতলী টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, ফাঁকা রয়েছে গাবতলী বাস টার্মিনাল। নেই লোকজনের চলাচল। ছেড়ে যাচ্ছে না দূরপাল্লার কোনো বাস, অধিকাংশ কাউন্টারও বন্ধ। যাত্রী যদিও দু-একজন আসছেন, কিন্তু বাস না ছাড়ায় তারাও পড়েছেন বিপাকে।
কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা জানান, অবরোধ এলে যেমন যাত্রীর সংখ্যা কমে যায়, তেমনি ঝুঁকি বিবেচনায় মালিকরা গাড়ি ছাড়তে চায় না।
চুয়াডাঙ্গাগামী সিডি এক্সপ্লোর পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, অবরোধ এলে মালিকরা ভয়ে গাড়ি ছাড়তে চায় না। যাত্রীরাও বুঝে গেছে যে অবরোধে গাড়ি পাওয়া যাবে না। তাই আজ কোনো লোকজন নেই।
মাগুরাগামী জে আর পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শাহজাহান বলেন, অবরোধের কারণে যাত্রীও নেই, ফলে বাসও ছাড়া হয় না। আমরাও পড়ছি বিপদে, স্টাফদের দৈনিক খরচ দিতে পারছি না।
খুলনা গেজেট/এনএম