মহামারী করোনাভাইরাসের মধ্যেও সহিংসতার শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু; ঘটছে ধর্ষণের ঘটনাও। গত তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সার্র্ভিসে (ওসিসি) ভর্তি হয়েছে ৫১ জন নারী ও শিশু। এর মধ্যে সাড়ে চার বছরের শিশু থেকে শুরু করে ষাট বছরের বৃদ্ধাও রয়েছে। গেল ৩ জুলাই থেকে শুরু করে গত দিন মাসের এ বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটে। একই সময় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে আসার সংখ্যাও কম নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু মানুষের মানসিক কু-প্রবৃত্তি আর হিংসাত্মক মনোভাব বৃদ্ধি এবং তাদের সঠিক বিচার না হওয়ায় ধর্ষণের প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) গত তিন মাসে ৫১ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আর বাকীরা ১৮ বছরের উর্দ্ধে। ২৪ সেপ্টেম্ববর ধর্ষণের শিকার হয়, খালিশপুর থানা এলাকায় ৬৫ বছর বয়সী এক নারী। এছাড়া বেশির ভাগ ঘটনাই খুলনার দাকোপ বটিয়াঘাটা ও পাইকগাছা উপজেলার।
সূত্রটি জানায়, খুলনার কয়রা উপজেলার বালিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা সাড়ে ৪ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে গত ১৮ আগস্ট ওসিসিতে ভর্তি হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর জেলার তেরখাদা উপজেলায় পুলিশ সদস্য কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী (৯) ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের মোকামপুর গ্রামের রেজাউল ইসলামকে (২২) গ্রেপ্তার করে। তিনি নাটোর পুলিশ লাইনসে কর্মরত।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর যশোরের কেশবপুরের পল্লীতে শারিরিক প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে (২০) ধর্ষণের অভিযোগে আব্দুল মোমিন (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। ১৫ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ শৈলকূপায় বগুড়া গ্রামে জোরপূর্বক ধর্ষণে ১৩ বছরের এক শিশু অন্তঃসত্বা হয়ে পড়েছে। ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে(ওসিসি) ভর্তির করে এসব নারী ও শিশুকে ডাক্তারী পরীক্ষার পর তাদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
নগরীর দৌলতপুর থানাধীন মহেশ^রপাশা ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীর বাবা বলেন, কোন ধর্ষণের সঠিক বিচার পাওয়া যায় না। যে কারণে প্রতিনিয়ত ধর্ষণের শিকার হচ্ছে আমাদের সন্তান আমাদের মা আমাদের বোন। একটি সঠিক বিচার হলে ধর্ষণের পরিমান কমে যেত বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে জনউদ্যোগ নারী সেলের আহবায়ক এড. শামীমা সুলতানা শীলু বলেন, ‘প্রতিনিয়তই নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়ে চলেছে। খুলনাতেও উদ্বেগজনক হারে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে। মূলত কিছু মানুষের মানসিক কুপ্রবৃত্তি আর হিংসাত্মক মনোভাব বৃদ্ধির ফলেই এসব ঘটনা বেশি ঘটছে।’ যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা যেত তাহলে এসব অপরাধ প্রবণতা কমে আসতো বলে দাবি করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/এমবিএইচ/এমএম