তিন দিন ধরে বাড়ি ছাড়া খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা তরুণী ও তাঁর মা। তারা কোথায় আছে, বলতে পারছেন না কেউ। পুলিশও তাদের খুঁজে বের করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
গত রোববার রাতে সোনাডাঙ্গা থানা থেকে মাইক্রোবাসে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন তরুণী। এরপর সোমবার, মঙ্গলবার এবং আজ বুধবার ডুমুরিয়ার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তরুণী ও তার মাকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের সব সদস্যের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
তরুণী ও তাঁর মা নানাবাড়িতে থাকেন।বুধবার সেই বাড়ি গেলে তরুণীর দুসম্পর্কের এক মামাতো ভাই বলেন, তাঁরা এখনো ওই দুজনের খোঁজ জানেন না। সেখানে খোঁজ নেওয়ার বা থানায় অভিযোগ করার মতো কেউ নেই। পুলিশ বলছে, পরিবারের লোকজন তরুণীকে উদ্ধার বা ধর্ষণের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করতে চান না। আর অভিযোগ না করায় তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
এর আগে শনিবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই নারী। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে অনেক দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল তার। শনিবার রাত সোয়া ১১টায় ওই নারী নিজেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন।
রোববার বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে হাসপাতালের ওসিসির সামনে থেকে ফিল্মিস্টাইলে তরুণী ও তার মাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদু্জ্জামান। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই। এ ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় তৈরি হলে তৎপর হয় পুলিশ।
আইনশৃংখলা বাহিনীসহ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তুলে নেওয়ার পর ওই তরুণী ও তার মাকে কেশবপুর উপজেলার তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে ১০টায় সেই মাইক্রোবাসে করে থানায় উপস্থিত হন তরুণী ও তার মা। থানায় পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
জিজ্ঞাসাবাদের পর গণমাধ্যমের কাছে তিনি দাবি করেন, ধর্ষণের শিকার হননি। তাঁকে তাঁর ভাই ও আরেক ব্যক্তি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে ভর্তি করেছিলেন।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ওই তরুণীর বাড়িতে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের আত্মীয়স্বজন কোনো অভিযোগ করতে চান না। তরুণী ও তাঁর মাকে উদ্ধার করে দিতে হবে বা তাঁরা নিখোঁজ রয়েছেন—সে ব্যাপারেও কেউ কিছু বলছেন না। এ কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে আর বেশি খোঁজ নেওয়া হয়নি।