যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তিন বন্দি কিশোর হত্যা মামলায় কেন্দ্রের চার কর্মকর্তাসহ ১২ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা। এদের মধ্যে আট জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক চারজনের নামে দোষীপত্র দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া একজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
৯ ফেব্রুয়ারি এ চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়। শুক্রবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রকিবুজ্জামান।
অভিযুক্ত চার কর্মকর্তা হলেন-সাময়িক বরখাস্তকৃত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক (সহকারী পরিচালক) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক (প্রবেশন অফিসার) মাসুম বিল্লাহ, ফিজিক্যাল ইনসট্রাক্টর একেএম শাহানুর আলম ও সাইকো সোশ্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমান।
অভিযুক্ত কেন্দ্রের চার বন্দি কিশোর হলো গাইবান্ধার খালিদুর রহমান তুহিন, নাটোরের হুমাইন হোসেন, মোহাম্মদ আলী ও পাবনার ইমরান হোসেন।
অপ্রাপ্তবয়স্ক দোষীরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আনিস, কুড়িগ্রামের রিফাত হোসেন, রাজশাহীর পলাশ ওরফে শিমুল ও পাবনার মনোয়ার হোসেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর রকিবুজ্জামান জানান, এ মামলায় ১৩ জন আসামি ছিলেন। তদন্ত শেষে এ ঘটনায় মোট ১২ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মধ্যে চার কর্মকর্তা ও চার বন্দি প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া অপর চার বন্দি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দোষীপত্র দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তদন্তে বন্দি কিশোর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সাময়িক বরখাস্ত কারিগরি প্রশিক্ষক (ওয়েল্ডিং) ওমর ফারুকের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ মেলেনি। এ কারণে চার্জশিটে তার অব্যাহতির আবেদন জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের প্রধান প্রহরী নূর ইসলামকে মারপিটের জেরে ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ১৮ বন্দি কিশোরকে কর্মকর্তাদের নির্দেশে নির্যাতন চালানো হয়। এ ঘটনায় বন্দি বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু পরামানিকের ছেলে নাঈম হোসেন, খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি ও বগুড়ার শেরপুরের মহিপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল হোসেন মারা যায়। এছাড়া গুরুতর আহত হয় আরও ১৫ জন। ওই ঘটনায় নিহত পারভেজ হাসান রাব্বির বাবা রোকা মিয়া কোতোয়ালি থানায় ১৩ জনের নামে মামলা করেছিলেন।