পাল্লেকেলে টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও শ্রীলঙ্কাকে অলআউট করতে পারেনি বাংলাদেশ। যদিও শেষ সেশনের খেলা পুরোপুরি মাঠে গড়ায়নি। বৃষ্টি ও আলোরস্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই খেলা শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন তাসকিন আহমেদ। দুই সেশনেই সাফল্য পেয়েছেন তিনি। দুই সেশন মিলে তিন উইকেট নিয়েছেন তিনি। তাঁর দারুণ বোলিংয়ে দ্বিতীয় দিন শেষে কিছুটা স্বস্তিতে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৫৫.৫ ওভারে ছয় উইকেটে ৪৬৯ রান। দিন শেষে ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন ডিকবেলা। তাঁর সঙ্গে ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন রমেশ মেন্ডিস।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে মোট ৩২.৫ ওভার বোলিং করে ১১৯ রানের বিনিমিয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। দিনের শুরু ও শেষ দিকে তাসকিনের একাদিক ক্যাচ মিস করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। নয়তো আরো উইকেট নিতে পারতেন ডান হাতি এই পেসার। তাসকিন ছাড়া সমান একটি করে নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। এর মধ্যে শরিফুল নিয়েছিলেন গতকাল প্রথম দিন।
আজ দ্বিতীয় দিনের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ঘণ্টায় উইকেটের দেখা পায়নি সফরকারীরা। বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছিলেন আগের দিনের সেঞ্চুরিয়ান লাহিরু থিরিমান্নে। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান তাসকিন। ডানহাতি পেসারের করা বল ডাউন দ্য লেগে খেলতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন থিরিমান্নে। ১৪০ রানে ভাঙে তাঁর প্রতিরোধ। ২৯৮ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল ১৫টি বাউন্ডারি।
থিরিমান্নের পর ব্যাটিংয়ে নামা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকেও টিকতে দেননি তাসকিন। ৫ রানে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়েই ফেরেন ম্যাথিউস। প্রথম সেশনে বাংলাদেশকে জোড়া সাফল্য এনে দেন তাসকিন। প্রথম সেশনে বাকি উইকেটটি নেন তাইজুল ইসলাম। ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে আউট করেন এই স্পিনার। প্রথম সেশনে ২৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা যোগ করতে পারে মাত্র ৪৩ রান।
এরপর দ্বিতীয় সেশনে রান তোলার গতি কিছুটা বাড়ে। ৩০ ওভারে ২ উইকেটের পতন হলেও শ্রীলঙ্কা তুলেছে ৯১ রান। দ্বিতীয় সেশনের দুটি উইকেটের একটি নেন তাসকিন। আরেকটি নেন মেহেদী মিরাজ।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার এক উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে টেস্টের প্রথম দিন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের হয়ে কাল একমাত্র উইকেটটি নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।
গতকাল টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বেশ সাবধানী শুরু করেন দুই লঙ্কান ব্যাটসম্যান করুনারত্নে ও লাহিরু। দুজনে মিলে প্রথম সেশনে স্কোরবোর্ডে তোলেন ৬৬ রান।
প্রথম ঘণ্টাতেই লঙ্কান অধিনায়ককে দুবার এলবির ফাঁদে ফেলতে আবেদন করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু সাফল্য আসেনি। এরপর করুনারত্ন ও লাহিরুর জুটি ভাঙার সুযোগ এসেছিল ২০তম ওভারে। তাসকিন আহমেদের করা বল করুনারত্নের ব্যাট ছুঁয়ে তা স্লিপে যায়। কিন্তু সেখানে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি। ২৮ রানে জীবন পান শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক। এ ছাড়া মিড অনেও ক্যাচের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন অধিনায়ক মুমিনুল।
ওপেনিংয়ে নেমে উইকেটে থিতু হয়ে যান লঙ্কান অধিনায়ক করানারত্নে। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম। তরুণ এই পেসারের বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন করুনারত্নে। ১১৮ রানে ভাঙে তাঁর প্রতিরোধ। ১৯০ বলে ১৫ চারে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। ভাঙে ২০৯ রানের ওপেনিং জুটি।
করুনারত্নে ফেরার পর সেঞ্চুরি তুলে নেন লাহিরুও। তাসকিনের বলে এক্সট্রা কাভার দিয়ে বল পাঠিয়ে তিনটি রান নিয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। সেঞ্চুরির পর ফার্নান্দোর সঙ্গে দিনের বাকি সময় নিশ্চিন্তে পার করেন লাহিরু।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ১৫৫.৫ ওভারে ৪৬৯/৬ (করুনারত্নে ১১৮, থিরিমান্নে ১৪০, ফার্নান্দো ৮১, ডি সিলভা ২, ম্যাথিউস ৫, ডিকবেলা ৬৪*, মেন্ডিস ২২*; মিরাজ ৩৪-৭-১০২-১, তাইজুল ৩৮-৭-৮৩-১, শরিফুল ২৯-৬-৯১-১, তাসকিন ৩২.৫-৭-১১৯-৩, রাহি ২২-৪-৬৯-০)।
খুলনা গেজেট/ এস আই