আফগান সরকারকে তালেবানের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আজ শুক্রবার (১৩ আগষ্ট) আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল এই আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে তালেবানের উত্থানের কারণে আফগানিস্তানে সহিংসতা ও শরণার্থী সংকট বেড়ে যাওয়ার উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য আফগান সরকারের উচিত তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ করা।
‘রাজনৈতিক মতপার্থক্য নিষ্পত্তি, সব স্টেকহোল্ডারদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি ও একতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমরা আফগান সরকারকে তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগে উৎসাহিত করি,’ যোগ করেন তিনি।
বোরেল আরও বলেন, ‘আফগানিস্তানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সহায়তার চাবিকাঠি হচ্ছে বিদ্যমান সংকটের শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান এবং নারী, পুরুষ, সংখ্যালঘু নির্বিশেষে সব আফগানদের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন।’
বোরেল তালেবানদের অবিলম্বে নিয়মিত ও কাঠামোগত আলোচনা শুরু, সহিংসতা বন্ধ ও একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার আহ্বানও জানান।
তিনি বলেন, ‘এই অব্যাহত হামলা আফগান নাগরিকদের জন্য অস্বাভাবিক কষ্টের কারণ হয়ে উঠছে। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে নিরাপত্তার সন্ধানে আফগানিস্তান ছেড়ে আসা নাগরিকদের সংখ্যা বাড়ছে।’
এ ছাড়া, তালেবান যদি জোর করে ক্ষমতা নেয় ও একটি ইসলামী আমিরাত পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে তবে তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাবে না, বিচ্ছিন্নতা ও আন্তর্জাতিক অসহযোগিতার মুখে পড়বে এবং আফগানিস্তানে সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এদিকে তালেবান বাহিনী আফগানিস্তানের কান্দাহার নগরী দখল করে নিয়েছে। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম এই নগরী জয়ের ফলে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে ১২টি তালেবানের দখলে চলে এলো। এর আগে তালেবান বাহিনী দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম নগরী হেরাত এবং কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ নগরী গজনি দখল করে।
বৃহস্পতিবার একই দিনে এই তিন নগরী জয় আফগানিস্তানে নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। গজনি দখল করার ফলে আফগান রাজধানী কাবুলের সাথে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর সংযোগ ছিন্ন হয়ে গেল।
রাজধানী কাবুল এখন পর্যন্ত সরাসরি হুমকির মুখে না পড়লেও অন্যান্য স্থানে তালেবানের অগ্রগতি আফগান সরকারকে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছে।
আরো পড়ুন : হেরাতের পর কান্দাহারের পতন
আলজাজিরার চারলট বেলিস রাজধানী কাবুল থেকে জানান, হেরাত জয় তালেবানের জন্য বিরাট এক সাফল্য এবং আফগান সরকারের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয়। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বড় ধরনের অভিযান চালায় তালেবান। তারা তারা আফগানিস্তানের বিভিন্ন স্থানে বিশাল এলাকা দখল করে নেয়। বেলিস বলেন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী কান্দাহারে লড়াই চলছে। এছাড়া বাদঘিশ প্রদেশেও যুদ্ধ চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জনগণ তালেবানকে স্বাগত জানাচ্ছে।
এদিকে তালেবান মুখপাত্র বৃহস্পতিবার বলেছেন, বড় বড় নগরী দ্রুততার সাথে পতন ঘটনা বোঝা যাচ্ছে যে আফগানরা তাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছে। তবে তিনি আল জাজিরা টেলিভিশনকে বলেন, আমরা রাজনৈতিক পথ ত্যাগ করিনি।
তবে সরকারি সূত্র জানিয়েছে, আফগান সরকার ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে তালেবানের কাছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই