খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

কপোতাক্ষ নদে ভয়াবহ ভাঙ্গন, আতঙ্কে এলাকাবাসী (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মেলা বাজার এলাকায় কপোতাক্ষ নদে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনের কারণে মেলা বাজার-মাঝিয়াড়া সংযোগ পাকা রাস্তাসহ ভাঙ্গন সংলগ্ন তিনতলা বাড়ীটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অতিসত্বর ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যে কোন সময় রাস্তা, মন্দীরসহ তিনতলা বাড়ীটি নদের গর্ভে বিলীন হয়ে বির্স্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কিত রয়েছে এলাকাবাসী।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, কপোতাক্ষ নদে মেলা বাজার এলাকার ভয়াবহ ভাঙ্গনের থেকে গুরুত্বপূর্ণ পাকা রাস্তাসহ মন্দির ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য আপৎকালীন জরুরী প্যকেজে-১ এর মাধ্যমে গাছ দিয়ে পাইলিং ও মাটি দিয়ে ভরাট করার জন্য ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

মেসার্স তানিয়া এন্টারপ্রাইজ কেশবপুর নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভাঙ্গন রোধে ২৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাইলিং ও মাটি ভরাটের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। সে মোতাবেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে বাঁধের পাইলিং ও মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করেছে। কিন্তু সপ্তাহ পার না হতেই পাইলিংসহ পাকা রাস্তার সিংহভাগ কপোতাক্ষ নদের গর্ভে চলে য়ায়। পরবর্তীতে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড, (পাউবে) একই স্থান রক্ষার জন্য আবারও আপৎকালীন জরুরী প্যকেজে-২ এর আওতায় বালির বস্তার ডাম্পিংয়ে ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তানিয়া এন্টারপ্রাইজকে। যার কাজ চলমান রয়েছে।

ব্যবসায়ী কাশেম আলীসহ স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ন মেলা বাজার- মাঝিয়াড়া সংযোগ স্থানের বেড়িবাঁধটি কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষার জন্য পাইলিং ও মাটি ভরাটের জন্য সরকার ইতিপূর্বে ২৯ লক্ষ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানের পাইলিং ও মাটি ভরাট করার কারণে সপ্তাহ না যেতেই পাইলিংসহ পাকা রাস্তাটি কপোতাক্ষে চলে গেছে।

তারা আরো বলেন, এখন শুনছি বালুর বস্তা দিয়ে নাকি ডাম্পিং করবে। সেখানে নাকি আরো ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এত টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পরেও ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে কখন যে মন্দীরসহ ঘরবাড়ী নদীতে মিশে যায় সেই আশংকায় রয়েছেন তারাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা বলেন, বালুর বস্তায় ১৭৫ কেজি করে বালু দেয়ার কথা থাকলেও দিচ্ছে অনেক কম, তাই ভাঙ্গন পয়েন্টে এই বালুর বস্তার ডাম্পিং করলে কোনো উপকারে আসবে বলে মনে হয় না। সরকারের এত টাকা বরাদ্দের পরেও কাজের ধীরগতির ও নিম্মমানের পাইলিং এর কারণে বেড়িবাঁধটি চলে গেলো নদের মধ্যে। এখন বাঁধ যে টুকু আছে দ্রুত ডাম্পিং করে সংস্কার না করা হলে বাকি বাঁধসহ, মন্দীর, ঘরবাড়ি কপোতাক্ষ নদের গর্ভে বিলিন হয়ে বির্স্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকায় দিন কাটছে তাদের।

তবে এবিষয়ে ঠিকাদার আব্দুল মতিন বলেন, আপৎকালীন জরুরী প্যকেজের-১ পাইলিং ও মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ করেছেন। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই পাইলিংসহ পাকা রাস্তাটি কপোতাক্ষে নদে ডেবে গেছে। এখন আপৎকালীন জরুরী প্যকেজের-২ এর মাধ্যমে ফের ডাম্পিংয়ের কার্যাদেশ পেয়েছেন। প্রথম পর্যায়ে ভাঙ্গন এলাকায় ৫শ বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। বর্তমানে বালির বস্তা ভরাটের কাজ চলছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাকী বস্তা গুলো ফেলে ডাম্পিংয়ের কাজ শেষ করা হবে বলে জানান তিনি।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিরুল ইসলাম জানান, তালা উপজেলার মেলাবাজারের সন্নিকটে কপোতাক্ষ নদের তীরে ভাঙ্গন রোধে আপৎকালীন জরুরী প্যাকেজের আওতায় প্রথমে ২৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গাছ ও বাঁশ দিয়ে পাইলিং করলেও সেটা টেকেনি। একই জায়গায় আবারও আপৎকালীন জরুরী প্যাকেজের ২৭ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৭হাজর ২শ বালুর বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করা হচ্ছে।

বস্তায় বালুর পরিমান কমের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন বস্তায় বালু ভরা হচ্ছে। বালু ভর্তির কাজ শেষে আমরা ওজন করে নির্দেশনা দিলে বস্তা সেলাই করে বাঁধ দেয়া হবে।

এছাড়া প্রকল্প মনিটরিং এর জন্য এমপি সাহেবের প্রতিনিধি বীরমুক্তিযোদ্ধা মইনুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।

তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জয় সরকার বলেন, আমাদের কমিটিতে রাখা হলেওকাজের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি, এমনকি ইস্টিমেটও তাদের কাছে দেয়া হয়নি। শুধু একদিন বালুর বস্তা গণনার জন্য তাদের ডাকা হয়েছিল।

খুলনা গেজেট/ বি এম শহিদুল/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!