আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের বরই পাওয়া যায়। ঋতুকালীন ফলটিতে ভিটামিন ‘সি’ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এটি গলার ইনফেকশনজনিত অসুখ (যেমন: টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বাতে ঠাণ্ডাজনিত লালচে ব্রণের মতো ফুলে যাওয়া, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া) দূর করে।
বরই এর রস অ্যান্টি-ক্যানসার ড্রাগ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ফলে রয়েছে ক্যানসার সেল, টিউমার সেল, লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো অসাধারণ শক্তি। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এ ফল যথেষ্ট উপকারি। রক্ত বিশুদ্ধকারক হিসেবে এই ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। ডায়রিয়া, ক্রমাগত মোটা হয়ে যাওয়া, রক্তের হিমোগ্লোবিন ভেঙে রক্তশূন্যতা তৈরি হওয়া, ব্রঙ্কাইটিস—এসব অসুখ দ্রুত ভালো করে বরই।
রুচি বাড়ানোর জন্যও এই ফলটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সিজনাল জ্বর, সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে গড়ে তোলে প্রতিরোধ। নিদ্রাহীনতা দূর করে এ ছোট্ট ফল। আমাদের কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে বরই। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলটি ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে। তারুণ্য ধরে রাখে।
শীতকালে বাজারে প্রচুর বরই পাওয়া যাচ্ছে। হাতের নাগালে পেয়ে যাবেন এ বরই। আর পুরো বছর খাওয়ার জন্য বরই দিয়ে আচার তৈরি করে রাখুন। খুব সহজে তৈরি বরই-এর টক-মিষ্টি-ঝাল আচার:
উপকরণ:
বরই ২ কেজি, হলুদ গুঁড়া ২ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ৪ চা-চামচ, লবণ ৬ চা-চামচ, সিরকা আধা কাপ, পাঁচফোড়ন গুঁড়া ৪ চা-চামচ, তেজপাতা ৪/৫ টি, আদা বাটা ৩ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ৫ টেবিল চামচ, সরিষা বাটা ৬ টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ ৮ টি, চিনি-১ কাপ ও সরিষার তেল ৩ কাপ।
প্রণালী
প্রথমে বরই ধুয়ে লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। এবার একটা পাত্র চুলায় দিয়ে গরম করুন এবং তেল দিন। তেল গরম হলে তেজপাতা ও শুকনা মরিচ ভেজে সব মসলা দিয়ে ৬ মিনিট কষিয়ে নিন। মসলা কষানোর সময় পানির পরিবর্তে সিরকা দিন। সেদ্ধ বরইগুলো দিয়ে নাড়তে থাকুন কিছুক্ষণ পর চিনি দিন। বরই-এর পানি শুকিয়ে তেল উঠে এলে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে স্বচ্ছ জারে ভরে রাখুন। বেশি দিন সংরক্ষণের জন্য মাঝে মাঝে আচার রোদে দিতে হবে।
আর যারা এত কষ্ট করতে চান না, তারা খুব সহজে তেল মসলা ছাড়া বরই আচার করে রেখে দিন। বেশ কয়েক দিন খেতে পারবেন।
দেশি আধা পাকা বরই নিন আধা কেজি, কিছু দেশি রসুনের কোয়া, শুকনা মরিচ আর লবণের লেয়ার করে একসঙ্গে বয়ামে ভরে কয়েক দিন ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন।
খুলনা গেজেট/এনএম