কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী তনু হত্যার ছয় বছর আজ। এই অর্ধযুগেও হত্যা মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। দীর্ঘ অপেক্ষা করে কোনো সমাধান না পেয়ে বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছে তনুর পরিবার।
গণজাগরণ মঞ্চের কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আনাম রায়হান জানান, তনু হত্যাকারীদের বিচারের আশায় আমরা রাজপথে টানা আন্দোলন করেছি। কিন্তু আমরা কোনো বিচার পাইনি। একটি আলোচিত হত্যার শেষ পরিণতি এমন হবে ভাবতেই অবাক লাগে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সভাপতি এস এম রুবেল জানান, তনুর আত্মার শান্তি কামনা করে আমরা কলেজ থিয়েটারে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করব। এই বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, তনুর মৃত্যুবার্ষিকী এলেই সাংবাদিকরা খোঁজ-খবর নেন, আর কেউ খবর নেয় না। ডিএনএ রিপোর্ট আসতে ছয় বছর লাগার কথা না। আমরা বিচারের আশা করে দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করেছি। এখন আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আল্লাহর বিচার বড় বিচার।
মামলার বাদী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, শুরুতে দেশজুড়ে আন্দোলনের সময় ভেবেছি দ্রুত বিচার পাব। কিন্তু ছয় বছরেও আমাদের আশা পূরণ হয়নি। আমরা গরিব মানুষ, তাই কোনো বিচার পাচ্ছি না।
তিনি আরও বলেন, তনুর জন্য স্থানীয় মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। কিছু এতিমদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি।
মামলাটি বতর্মানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে। সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে পিবিআইর ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, সিআইডির পর আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর বেশি দূর এগুতে পরিনি। তবে আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি বাসায় প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে তনু নিখোঁজ হয়। পরে রাতে সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর পুলিশ, ডিবি ও পরে সিআইডি মামলা তদন্ত করেও কোনো কুল-কিনারা পায়নি। সর্বশেষ পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর তনু হত্যা মামলার নথি পিবিআইয়ে হস্তান্তর করা হয়। হত্যার ছয় বছর পার হলেও তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই