বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। কারণ, দেশের মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতেই স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে তাদের গুন্ডা বাহিনী অথবা পুলিশ বাহিনী দিয়ে জনগণকে ভোট দিতে বাধা দিয়েছে। অথবা আগের রাতেই ভোট দিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রহসন করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বুঝতে পেরেছে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তারা আর ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তাদের এত ভয়। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এ দেশটি কারোর দয়ায় পাইনি। মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে আমরা স্বাধীন করেছি আওয়ামী লুটেরা বাহিনীর দ্বারা দেশটা লুটপাটের জন্য নয়। আজ সারা বিশ্বের মানুষ জানে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, এখানে কোনো গণতন্ত্র নেই। এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেল, সারসহ যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি আন্দোলন শুরু করায় ইতোমধ্যে যুবদল ও ছাত্রদলের তিনজন কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার আমাদের আন্দোলন থামাতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের আর ডাক দেওয়া হবে না, যে আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে তাই চলমান থাকবে। দেশে আর লুটপাট ও দুর্নীতি চলবে না, জনগণ জেগে উঠতে শুরু করেছে, দয়া করে বিদায় হও। অবিলম্বে পদত্যাগ করে ও সংসদ বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দাও।
আজ শুক্রবার বিকেলে আ স ম হান্নান শাহর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ার ঘাগটিয়া চালা ওয়েলফেয়ার মাঠে অনুষ্ঠিত মিলাদ মাহফিল ও আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহ ছিলেন একজন নির্ভিক সাহসী সৈনিক। তিনি দল ও দেশের সংকটময় মুহূর্তে সত্যিকার দেশ প্রেমিক নেতার ভূমিকা পালন করেছেন। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের শাসনকালকে এক ভয়াবহ দুঃসময় ও কারারুদ্ধ অবস্থা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল হান্নান শাহর গভীর অভাব অনুভব করার কথা ব্যক্ত করেন।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে এবং কাপসিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার সঞ্চালনায় অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক খাইরুল কবির খোকন, সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, শ্রম বিষয়ক সহসম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, স্বাস্থ্য বিষয়ক সহসম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, মো. মজিবুর রহমান ও হান্নান শাহর ছেলে গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ।
আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলের পূর্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হান্নান শাহের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।