রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয়পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে সেখানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও গুলি ছোঁড়ে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই ব্যবসায়ী। এছাড়া পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে আহত হন ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থী। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। আহতরা হলেন- মোশাররফ হাজারি (২৪) ও রজব রহমান (২৭)।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সাথে আমাদের (ঢাকা কলেজ) দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পুলিশ আমাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে মোশারফ হোসেন রাবার বুলেটে আহত হন। অন্যদিকে পুলিশের ছোড়া টিয়ার শেল এসে রজবের বুকে লাগে।
এদিকে আহতদের মধ্যে মোশাররফের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরে প্রায় অর্ধশতাধিক রাবার বুলেটের চিহ্ন দেখা গেছে। তাকে আইসিইউতে নিতে বলেছে চিকিৎসক। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে উত্তপ্ত এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সংঘর্ষ চলাকালীন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট ও ঢাকা কলেজের সামনে অবস্থান নেন। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন। তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে রমনা জোনের এডিসি হারুন-অর রশিদ ও অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। রাত পৌনে ১টার দিকে যোগ দেয় অতিরিক্ত পুলিশ। তারা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ১৫-২০ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের রাবার বুলেটও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।
রাত ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সংঘর্ষের জেরে মিরপুর রোডের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষের কারণ সম্পর্কে নিউমার্কেট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাহেব আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির জেরে ঘটনার সূত্রপাত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।’
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই ব্যবসায়ী আহত হন। এছাড়া পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে আহত হন ঢাকা কলেজের দুই শিক্ষার্থী। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে ডিএমপির নিউমার্কেট জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) শরীফ মুহাম্মদ ফারুকুজ্জামান বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাত ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।