নির্বিচার খালে বর্জ্য ফেলে পানিপ্রবাহের পথ যে নষ্ট করা হচ্ছে, তা দেখাতে ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। সেখানে রাখা হয়েছে খাল থেকে তোলা পরিত্যক্ত লেপ, তোশক, সোফা, লাগেজ, খাট, কেব্ল, টায়ার, কমোড, ফুলের টব, রিকশার অংশবিশেষ, টেবিল, চেয়ার, বেসিন, ব্যাগসহ প্লাস্টিকের নানা পণ্যসামগ্রী।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের (গুলশান-২) সামনের সড়কে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। প্রদর্শনীটি চলবে ১৭ মে পর্যন্ত।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখছি অনেকে অসচেতনভাবে গৃহস্থালির বর্জ্য খাল, ডোবা, নালা, ড্রেনে ফেলে দেন। সারফেস ড্রেনে ও খালে এমন কোনো ময়লা নেই, যা পাওয়া যায় না। আমরা অবাক হয়ে যাই প্রতিনিয়ত নানা ধরনের ময়লা নির্বিচার সবাই ফেলে দিচ্ছে খালে ও ড্রেনে।’
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র বলেন, ‘ড্রেনে, খালে ও যত্রতত্র এসব বর্জ্য ফেলায় দূষণ হয় নগরের পরিবেশ। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আজকে এই বর্জ্য-প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়েছে, যাতে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতার সৃষ্টি হয়। জনগণ যেন বুঝতে পারে কী ধরনের বর্জ্য ড্রেনে ও খালে ফেলে পরিবেশ দূষণ করছে। এই জন্যই এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছি।’
উন্নত দেশে বাড়ির সামনের দিকে খাল থাকে কিন্তু আমাদের দেশে উল্টো চিত্র, এমন মন্তব্য করে আতিকুল ইসলাম বলেন, সবাই খাল পেছনে রেখে বাড়ি বানায়। খালগুলোকে সবাই ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। শহরের প্রতিটি খাল থেকে নানা ধরনের বর্জ্য পাওয়া যাচ্ছে। খালগুলোতে চেয়ার–টেবিল, লেপ–তোশক, টায়ার, কমোড, সোফাসহ এমন কিছু নেই যে পাওয়া যায় না। সারফেস ড্রেনে প্লাস্টিক বোতল, পলিথিনে ভর্তি। এগুলোর কারণে ড্রেন ও খালের প্রবেশমুখ ব্লক হয়ে থাকে। ফলে বৃষ্টি হলেই জলজট সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ড্রেন থেকে বর্জ্য অপসারণ করতে সময় লেগে যায়।’
এ সময় সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘রাজধানীতে বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধতার জন্য ১০টি অঞ্চলে ১০টি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ে জলজট দূর করতে এই কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। কোথাও পানি জমে থাকলে নগরবাসীকে ১৬১০৬ হট লাইনে যোগাযোগ করার কথা জানান তিনি।
বর্জ্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে অন্যদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এইচ