দেশে আবার বাড়তে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। করোনার সংক্রমণ কেন বাড়ছে; এ বিষয়ে কথা বলেছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক তাহমিনা শিরিন। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও ডেল্টা ধরনেই এখন করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। আজ মঙ্গলবার তিনি এ কথা বলেন।
তাহমিনা শিরিন বলেন, করোনার ডেল্টা ধরনের দাপটে গত বছরের মাঝামাঝিতে দেশে করোনায় মৃত্যু, রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার বেড়েছিল। তবে আগস্টে দেশব্যাপী করোনার গণটিকা দেওয়ার পর সংক্রমণ কমতে থাকে। গত ডিসেম্বরের প্রথম কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা শনাক্ত ১ শতাংশের ঘরেই ছিল। কিছুদিন ধরে সংক্রমণে আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাকে বর্তমান সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ বলে মন্তব্য করেন তাহমিনা শিরিন। তিনি বলেন, ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যবিধি এক। এখন বিয়েশাদি হচ্ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। নির্বাচন হচ্ছে, সেখানেও মাস্ক নেই।’
দেশে গত ডিসেম্বর মাসে প্রথম করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়। অমিক্রন এখন নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে অমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার বিস্তার রুখতে পশ্চিমবঙ্গসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে এরই মধ্যে আবার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সোমবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের স্কুল-কলেজসহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষের চলাচলেও কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। করোনার ডেলটা ধরনের বিপর্যয় পার করে আসা ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সম্প্রতি আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৮০ শতাংশের বেশি ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছেন।
তবে দেশের চলমান সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা ডেল্টার কারণে বলেই মনে করছেন তাহমিনা শিরিন। তিনি বলেন, ‘নভেম্বর মাসে ১০০ ভাগ রোগী ডেল্টা ধরনে আক্রান্ত ছিলেন। এক মাসে তো তা উবে যাবে না। তাই আমরা বলতে পারি না যে ওমিক্রনের জন্যই সংক্রমণ একটু একটু করে বাড়ছে।’
প্রতি মাসে করোনার জিন বিন্যাস বা জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রতি মাসেই করে আইইডিসিআর। ডিসেম্বরের সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন না হলেও গত মাসে অমিক্রনের কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা কম বলেই মনে করেন আইইডিসিআরের পরিচালক। তিনি বলেন, ‘আলফা বা বিটাকে অতিক্রম করে ডেল্টা প্রাধান্যশীল হয়ে উঠেছিল। ডিসেম্বর মাসের কথা এখন বলতে পারব না। ডিসেম্বর মাসে সিকোয়েন্সিং এখনো হয়নি।’
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশে করোনায় মৃত্যু, নতুন রোগী ও পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার-সবই বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬৭৪ জন। এ সময় করোনায় আক্রান্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম