দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ২৩২ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৩ জন।
এনিয়ে দেশে ডেঙ্গু শনাক্তের সংখ্যা ১১ হাজার ৫০০ জন ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ রোগীই রাজধানীর বাসিন্দা। সবমিলিয়ে এই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ৫১ জন।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সারাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন ২৬৫ জন ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৭৩ জনে।
ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১ হাজার ১৩৭ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৩৬ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ (৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ১১ হাজার ৫০১ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১০ হাজার ১৭৪ জন রোগী।
গত জানুয়ারিতে ৩২ জনের দেহে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বছর শুরু হয়। জুনে এটি ১৭২ জনে ওঠে। জুলাই মাসে সেটিই হয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২৮৬ জনে। তাতে সবমিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ডেঙ্গুতে মোট শনাক্ত দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৫৮ জন। জুলাই থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। আগস্টে এসে চিত্রটি উদ্বেগজনক হয়ে পড়ে। ওই মাসটিতে ডেঙ্গু রোগী দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৬৯৮ জনে। এরপর সেপ্টেম্বরের প্রথম চার দিনেই এক হাজার ১৪৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, বছরের প্রথম সাত মাসে ১২ জনের মৃত্যু হলেও পরের এক মাসেই (আগস্ট) ৩৩ জনের মৃত্যু হয়। এমনকি সেপ্টেম্বরের প্রথম চার দিনেই পাঁচ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সবমিলিয়ে ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। ওই বছর এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মারা যান ১৪৮ জন। ডেঙ্গুতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ২০০২ সালে, সে সময় ৫৮ জনের মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এছাড়া ২০০১ সালে ৪৪ জন মারা যান। ২০১৯ সালে ডেঙ্গু ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেও করোনা মহামারি শুরুর বছর ২০২০ সালে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে চলতি বছর উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী।