প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয়াবহ ভারতীয় ধরন (ভ্যারিয়েন্ট) এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের দুই রোগীর শরীরে পাওয়া গেছে। এ নিয়ে হাসপাতালটিতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ চিকিৎসাধীন অন্য রোগীদের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ভারত থেকে আসা দুই রোগীর শরীরে আমরা করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) পেয়েছি। তাদেরসহ ভারত থেকে আসা সব রোগীকেই কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। নির্দেশনা মোতাবেক ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া দুজনের নমুনা বক্ষব্যাধি হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সময়টা যেহেতু চ্যালেঞ্জিং এবং কোভিড রোগীদের নিয়ে আমরা কাজ করছি, তাই প্রতি মুহূর্তেই নিজেদেরই আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমাদের সবারই করোনা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, মাস্ক পরতে হবে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যদি ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে কিন্তু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।
গত বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন বি.১.৬১৭ বিশ্বের ৪৪টি দেশে শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ডব্লিউএইচওর আওতার বাইরে আরও পাঁচটি দেশেও এই ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগে গত শনিবার (৮ মে) রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন শনাক্তের কথা জানায়।
সে সময় আইইডিসিআর জানায়, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের একটি নমুনা পরীক্ষায় এ ভারতীয় স্ট্রেইন (ধরন) ধরা পড়েছে, যা জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটাতে (জিএসআইডি) প্রকাশিত হয়েছে।
তখন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলমও দেশে ভারতীয় ধরন পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীরা ভারত থেকে ফিরেছেন। তারা চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন।
এ প্রসঙ্গে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম আলমগীর বলেন, এভারকেয়ার হাসপাতালে একটি নমুনা পাওয়া গিয়েছে। সেটি আমি দেখেছি। আর ধরা পড়ছে বলেই এ ধরনের তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। কয়জনের মধ্যে এরকম ধরন পাওয়া গেছে? -জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কয়জনের মধ্যে পাওয়া গেছে সেই সংখ্যাটা আমাদের কাছে আসেনি, তাই বলতে পারছি না।
গত বছরের অক্টোবরে ভারতে প্রথম এই ধরন (ভারতীয়) শনাক্ত হয়। এই ধরনের কারণেই ভারতে বর্তমানে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে। ভারতের পর এই ধরনটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে ব্রিটেনে।