বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্মরণে নাগরিক শোকসভা শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় খুলনা প্রেসক্লাব ভি আই পি লাউঞ্জে ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী নাগরিক শোকসভা পালন কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাফর ইমামের সভাপতিত্বে এবং শোকসভা পালন কমিটির আহ্বায়ক নাগরিকনেতা এ্যাড. কুদরত-ই-খুদার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শোকসভা পালন কমিটির সদস্য সচিব এ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী।
লিখিত জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন শোকসভা পালন কমিটির সদস্য সুতপা বেদজ্ঞ। শোকসভায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ও উপস্থিত ছিলেন বিএমএ খুলনা সভাপতি ডাঃ বাহারুল আলম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সদস্য ও খুলনা জেলা সভাপতি ডাঃ মনোজ দাশ, শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. নুরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, অধ্যাপক আবুল ফজল, সিপিবি কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা সাধারণ সম্পাদক এস এ রশীদ, ওয়াকার্স পার্টি খুলনা মহানগর সভাপতি শেখ মফিদুল ইসলাম, জেলা ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দিন দিলু, বাসদ খুলনা জেলা সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত নাণ্টু, সিপিবি মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. নিত্যানন্দ ঢালী, সাম্যবাদী দলের খুলনা জেলা সমন্বয়ক এফ এম ইকবাল, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শাহীন জামাল পন, শোকসভা পালন কমিটির সদস্য নাজমুল আজম ডেভিট, নারী নেত্রী অধ্যক্ষ শেখ রেহেনা আক্তার, রোজি রহমান, অধ্যাপক রমা রহমান, অধ্যাপক অজান্তা দাস, মেরীনা যুঁথি, আলমাস আরা, জাহানারা আক্তারী, সাংবাদিক মোতাহার রহমান বাবু, এইচ এম আলাউদ্দিন, ওয়াহেদুজ্জামান বুলু, নাগরিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরমোহাম্মদ মোড়ল, কবি সৈয়দ আলী হাকিম, আফজাল হোসেন রাজু, ডাঃ এস কে সাহা, আগুয়ান ’৭১-এর মোঃ আব্দুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক খলিলুর রহমান সুমন, মাহফুজুর রহমান মুকুল, অশোক ম-ল, কাজী জাবেদ খালিদ জয়, বাসদের আব্দুল করিম, কোহিনুর আক্তার কণা, ক্যাপ্টেন ডি কে হালদার, সরোজ দাস পিণ্টু, শেখ আব্দুল হালিম, শ্যামন আরিফিন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থকে এফআরসিএস প্রাইমারী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৭১ সালে ব্রিটেনে বসবাসরত এক হাজারের বেশী বাংলাদেশী চিকিৎসক নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি বিভিন্ন দেশে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। স্বাধীনতার পর তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ঔষধনীতি প্রণয়ন। বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল ঢাকার ইস্কাটনে পুনঃস্থাপিত হয়। ১৯৭২ সালে গ্রামকে উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ‘চলো গ্রামে যাই’ স্লোগানে হাসাপাতালটি সাভারে স্থানান্তর করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামকরণ হয়। ১৯৯৬ সালে ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী ‘দ্যা পলিটিকস অব এসেন্সিয়ার ড্রাগস : দ্য মেকিংস অব সাকসেসফুল হেলথ স্ট্রাটেজিÑলেসন্স ফ্রম বাংলাদেশ’ বইটি প্রকাশিত হয়। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৭৪ সালে ‘সুইডিস ইয়ুথ পিস’, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার, ১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে বিকল্প নোবেল হিসেবে পরিচিত ‘রাইট লাইভলিহুড’, ২০০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো’ এবং মানবতা সেবার জন্য কানাডা থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি দেশে মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবী করেন। তাঁর জীবন আমাদের শেখায় মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থাকলে কোনো শক্তি তাকে হারাতে পারে না। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজীবন মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন।
খুলনা গেজেট/কেডি