খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ঋষভ পন্ত

ঠিকাদারের স্কেভেটরে পিষ্ট হলো ১২ একর জমির ধান

মোংলা প্রতিনিধি

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালীপনায় মোংলায় নষ্ট হলো কৃষকের ১২ একর জমির ধান। ধান চাষিদের কিছু না জানিয়ে স্কেভেটর (মাটি কাটা মেশিন) চালিয়ে রোপা আধাপাকা আমান ধান মেশিনে পিষে দিয়ে নষ্ট করে দেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এতে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় হতদরিদ্র কৃষকরা। বাঁধার মুখে শেষ পর্যন্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্কেভেটর সরিয়ে নিলেও কষ্টে বোনা ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কা বিরাজ করছে কৃষক পরিবারে।

কৃষকরা জানায়, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পতিত জমি ইজারা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে ধান সহ মৌসুমী নানা ফসলের আবাদ করে আসছেন স্থানীয় হতদরিদ্র অনেক কৃষক। প্রতিবছরের মতো এবারও আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ইজারা নিয়ে মৌসুমের শুরুতে রোপা আমনের চাষাবাদ করেছিলেন তারা। বাতসে ধানের দোলন আর বাম্পার ফলনে কষ্টের গ্লানি যেন ভুলে গিয়ে ছিলেন এখানকার কৃষক পরিবার গুলো। এরই মধ্যে হঠাৎ গতকাল সকালে কৃষকের আধাপাকা ধানের ফসলে নেমে পড়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ ড্রেজিং প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ঘাতক স্কেভেটর। কৃষকরা কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই বালু ডাম্পিংয়ের ডাইক (ভেড়ী) তৈরির কাজ শুরু হয়। আর এ স্কেভেটর দিয়ে মাটিতে মিলিয়ে দেয়া হয় বিপুল অংশের আধাপাকা আমনের ফসল।

কৃষক আয়ুব আলী, বিল্লাল সরদার, ইদ্রিস আলী, ফারুক শেখ, মান্না শেখ ও মর্জিনা বেগম জানান, ধার-দেনা ও সমিতির লোন নিয়ে এ বছর আবাদ করেছেন তারা। আমন ধান উঠলে শোধ করবেন পাওনাদারের দেনা। সংগ্রহ করবেন পরিবারের এক বছরের ধান-চাল। রয়েছে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ ও পরিবারের সদস্যদের ভরনপোষণ। এখন আমন ফসল ঘরে ওঠা তো দূরের কথা দুশ্চিন্তার শেষ নেই কৃষক পরিবারে।

স্থানীয় কৃষক সমিতির সভাপতি মোঃ শামিম জানান, বন্দর কর্তৃপক্ষের শত শত একর পতিত জমি বছর চুক্তিতে বরাদ্দ নিয়ে ধানের আবাদ সহ কৃষি চাষাবাদ করছেন শতাধিক কৃষক। ধান উঠলেই শুরু হবে মৌসুমী সবজি চাষ। লবনাক্ত অঞ্চল হওয়ায় এখানকার কৃষকরা মৌসুমী রোপো আমন ফসলের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ড্রেজিং প্রকল্পের ঠিকাদারের হঠাৎ আগ্রাসনে কৃষকদের মাথায় হাত উঠেছে। ইতোমধ্যে ১২ একর জমির রোপে আমনের আধা পাকা জমিতে ভেড়ী তৈরির নামে শুরু হয়েছে তান্ডব।

এ ঘটনায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন স্থানীয় অনেক দরিদ্র কৃষক পরিবার। তাদের দাবি ইজারা নিয়ে রোপো আমনের আবাদ করেছিলেন তারা। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষের নোটিশ ছাড়াই ঠিকাদারের খামখেয়ালীপনা আচরনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কৃষকরা। ঠিকাদারের এমন আচরণ বন্ধে কর্তৃপক্ষের পরিচালক প্রশাসনের দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা।

এ বিষয় ঠিকাদার নিয়োগকারী মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হাইড্রেগ্রাফি বিভাগের কর্মকতা কামরুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ও ধান পাকা পর্যন্ত সময় দেয়া হবে কিনা তা সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ধান পাকা পর্যন্ত কৃষকদের সময় দেয়ার বিষয়টি ভাবছেন তারা।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!