খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত
  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত

টিপু হত্যা, দেড় মিনিটের কিলিং মিশনে ১২ রাউন্ড গুলি

গেজেট ডেস্ক

রাজধানীর শাহজাহানপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু নিহত হন। ঘটনাস্থলের পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরিন প্রীতি নামে বদরুন্নেসা কলেজের এক ছাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন জাহিদুলের গাড়িচালক মুন্না।

প্রত্যক্ষদর্শী, সিসিটিভি ফুটেজ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কিলিং মিশনটি চলে মাত্র দেড় মিনিট। একজন হামলাকারীর মাথায় হেলমেট ও মুখে মাস্ক পরে এসে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। মাত্র দেড় মিনিটে হত্যাকারী কিলিং মিশন শেষ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আর ঘটনাস্থলেই মারা যায় টিপু।

এ বিষয়ে শুক্রবার (২৫ মার্চ) দুপুরে শাজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ঠাকুর দাশ বলেন, খুব অল্প সময়ে কিলিং মিশনটি শেষ করে দুর্বৃত্তরা। তারা কিলিং মিশন শেষ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। একজন হামলাকারীরা ১২ রাউন্ড গুলি ছুড়েন কিলিং মিশনে।

অন্যদিকে দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে উপস্থিত টিপুর বন্ধু মো. মিজানুর রহমান জানান, তিনি ঘটনার সময় টিপুর গাড়িতে ছিলেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ দেড় মিনিট সময় ধরে হত্যাকারী গুলি ছুড়ে। এর পর দৌড়ে পালিয়ে যায়। গুলি লাগার পর টিপু কোনো কথা বলেনি। গুলি লাগার পর সঙ্গে সঙ্গেই সে মারা যায় বলে তখন তাকে দেখে বুঝতে পারলাম।

তিনি বলেন, আমরা যখন যানজটে পড়ি তখন এলোপাতাড়ি গুলি আসতে থাকে আমাদের দিকে। তবে কে গুলি ছুড়ছিল তা আমরা দেখিনি। টিপু ভাই চালকের পাশে বসা ছিলেন, আমরা পেছনে ছিলাম দুই জন। শুধু বৃষ্টির মতো গুলি আসছিল, আমরা কিছু বুঝতে পারেনি কাউকে চিনতেও পারেনি। গাড়ির দরজার গ্লাসের ওপর দিয়ে গুলি ছুড়া হয়, গুলি গ্লাস ভেদ করে জাহিদুলকে বিদ্ধ করে। এ সময় গাড়ির চালক মুন্নার হাতেও গুলি লাগে। তখন মুন্না এক হাতে গাড়ি চালিয়ে প্রথমে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে যায়, পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসি।

এজিবি কলোনি থেকে ঘটনাস্থলে আসতে কত সময় লেগেছিল তাদের, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ ৮-১০ মিনিট সময় লেগেছিল। এই সময়টাই জাহিদুল গাড়ির সামনে বসে একটি সিগারেট পান করছিলেন। তার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। কোনো কথাই বলতে পারলাম না।

টিপুকে ৪-৫ দিন আগে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল তার স্ত্রী মামলার এজাহারে বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন কিনা প্রশ্ন করা হলে মিজান বলেন, টিপুর সঙ্গে আমার কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। আমি তার বন্ধু, মাঝে-মধ্যে আড্ডা দিতাম একসঙ্গে। এ ধরনের কোনো কথা সে আমাকে বলেনি। কোনো সময়ই সে আমার সঙ্গে এ ধরনের কোনো কথা বলেনি।

মিল্কি হত্যার সঙ্গে তার নাম জড়িত ছিল এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন কিনা প্রশ্ন করা হলে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। প্রশাসন বিষয়টা দেখছে, তারা বলতে পারবে।

এদিকে এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।

এজহারে নিহতের স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি উল্লেখ করেন, আমার স্বামী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। আমার বাবার মতিঝিল কাঁচা বাজার এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে আছে। আমার স্বামী রেস্টুরেন্ট দেখাশোনা করতেন। আমরা স্বামী বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের ১০ বছর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন দলীয়ভাবে কোন্দল ছিল। গত ৪-৫ দিন আগে আমার স্বামীকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়।

এজাহারে তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল মাইক্রোবাস নিয়ে গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্নাকেসহ তিনি হোটেলের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য রওনা হন। মতিঝিল এজিবি কলোনির গ্র্যান্ড সুলতান নামে রেস্টুরেন্টে কাজ শেষে বাসার উদ্দেশ্যে আসার পথে রাত আনুমানিক সোয়া দশটার দিকে শাজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি গুলি করে এবং গুলিতে গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে যায়।

এ সময় গুলির কারণে আমার স্বামীর গলার ডান পাশে, বুকের বাম পাশে, বুকের বাম পাশের বগলের কাছাকাছি, পেটের মধ্যে নাভির নিচে, বাম কাঁধের ওপরে, পিঠের বাম পাশের মাঝামাঝি স্থানে, পিঠের বাম পাশের কোমর বরাবর, পিঠের ডান পাশের কোমরের ওপর মারাত্মক জখম হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুষ্কৃতিকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করার সময় প্রীতি নামে এক পথচারীও নিহত হয়।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!