ব্যাটারদের সবচাইতে লজ্জাজনক ও বিব্রতকর পরিস্থিতি হলো শূন্য রানে আউট হওয়া। ক্রিকেটের ভাষায় যাকে ‘ডাক মারা’ বলে। আর সেটি যদি হয় ‘গোল্ডেন ডাক’ তবে তো মাথা হেট।
কিন্তু এর চেয়েও ভয়ানক পরিস্থিতি ডেকে এনেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার নাথান গিলক্রিস্ট।
এ নিয়ে টানা ছয় ইনিংসে রানের খাতা না খুলেই আউট হয়েছেন তিনি। তার মধ্যে ‘গোল্ডেন ডাক’ আছে তিনটি!
এতেই শেষ নয়; শূন্য রানে সাজঘরে ফেরার লজ্জার কীর্তিতে চমক দেখিয়েছেন আরো। টানা তিন ম্যাচ মিলিয়ে তার স্কোর দাঁড়ায় এমন—০ এবং ০, ০ এবং ০, ০ এবং ০! অর্থাৎ, তিন ম্যাচেই ‘পেয়ার’ পেয়েছেন নাথান।
সব মিলিয়ে নাথানের স্কোর দাঁড়াল—০, ০, ০, ০, ০, ০!
কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ ডিভিশন ওয়ানে সম্প্রতি কেন্টের হয়ে খেলে এমন স্কোর দাঁড় করিয়েছেন নাথান।
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার হলেও নাথানের জন্ম জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে ২০০০ সালে। বাবা ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী হওয়ায় ইংল্যান্ডেও নাথানের পদচারণা সাধারণভাবেই।
মূলত ডানহাতি পেসার তিনি। কেন্ট কাউন্টি ক্লাবে টেল-এন্ডার ব্যাটার তিনি।
নাথানের এমন পারফরম্যান্স নিয়ে যতই রসিকতা করুক, ডাকের বন্যা বইয়ে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নিয়েছেন নাথান। ছেলেদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে টানা সর্বোচ্চসংখ্যক ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন তিনি।
১২তম ক্রিকেটার হিসেবে টানা ৬ ইনিংসে শূন্য রানে আউট হলেন তিনি।
এই অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডে প্রথম নাম লিখিয়েছিলেন সারে ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২২ ম্যাচ খেলা এডয়ার্ড জর্জ হার্টনেল। সেই ১৮৪৮ সালের কথা।
প্রায় অর্ধশতাব্দী পর ১৯০৫-০৫ মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ডে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টানা ছয় ইনিংসে শূন্য রানে আউট হন আলবার্ট উইলিয়াম রাইট। ১৩৬টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। ১৯০৭ সালে টানা ছয় ইনিংসে শূন্য রানে আউট হন ল্যাঙ্কাশায়ারের উইকেটকিপার উইলিয়াম ওরসলি।
১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে মিডিয়াম পেসার ভিক্টর ক্যানিংস ছয় ইনিংসে কোনো রান না করেই আউট হন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার আই এম কিডসনকে ১৯৮৭-৮৯ মৌসুমে এই রেকর্ডে নাম লেখান।
শ্রীলঙ্কার ঘরোয়া ক্রিকেটে আতুলা সেদারা (২০০০-০১ থেকে ২০০৫-০৬) এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার রোয়ান রিচার্ডসও (২০১১-১২ থেকে ২০১২-১৩) টানা ছয় ইনিংসে ডাক মারেন।
নাথানে আগে এই রেকর্ডে শেষ সংযোজন ছিলেন ইংল্যান্ডের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার চার্লি শ্রেক। ২০১৫ সালে তিনি এই অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডে ভাগ বসান।