সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ঈদ নেমেছে। রমজানে দীর্ঘ এক মাসের খরা কেটে দর্শনার্থীর স্রোত নেমেছে সাগরকন্যা খ্যাত এই সৈকতে। পর্যটকের ভিড় বেড়েছে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের পর থেকেই। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই উৎসবের ছুটির সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে সাপ্তাহিক বিরতি ও পহেলা বৈশাখের ছুটি। সব মিলে এবার লম্বা অবকাশ পাওয়া গেছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ছুটছেন ভ্রমণপিপাসুরা। তাদের বড় অংশই কুয়াকাটায় আসছেন বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুয়াকাটার আশেপাশের জেলা-উপজেলা থেকে আগত দর্শনার্থী ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকরা শুটকি পল্লী, গঙ্গামতির সৈকত, রাখাইন পল্লী, ইকোপার্ক, ইলিশ পার্ক, লেম্বুর বন ও সৈকতের ঝাউবাগানসহ অধিকাংশ পর্যটন স্পট এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। তাদের সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগসহ সমুদ্রের নোনাজলে গা ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতে উঠতে দেখা গেছে। সৈকতে কেউ গোসল করছেন, কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ছাতার নিচে বসে সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করছেন, আবার কেউ ঘোড়ার পিঠে চড়ে পুরো সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
খুলনা থেকে ঘুরতে আসা সুমনা বিশ্বাস বলেন, ‘আমি পরিবার নিয়ে ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটায় ঘুরতে এসেছি। বুধবার যখন আসি তখন বেশি পর্যটক ছিলেন না। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সৈকত এলাকা মুখর হতে থাকে। অনেক লোক দেখেও ভালো লাগছে।’
রমজানে দীর্ঘ একমাস কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা কম ছিল। সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরাও অলস সময় পার করেছেন। সেই খরা কেটে যাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। হাসি ফুটেছে তাদের মুখে। এবার তারা ঈদের প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করছেন।
হোটেল ডি’মোর-এর ব্যবস্থাপক জয়নুল আবেদীন জুয়েল বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমাদের ৬০ শতাংশ কক্ষ ইতোমধ্যে ভাড়া হয়েছে। শুক্র ও শনিবারকে কেন্দ্র করে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, সামনের সপ্তাহজুড়ে পর্যটকদের স্রোত অব্যাহত থাকবে।’
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার সেক্রেটারি জেনারেল জহিরুল ইসলাম জানান, ঈদের ছুটি উপলক্ষে অনেকদিন পর কুয়াকাটা পর্যটকদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। দর্শনার্থীর আনাঘোনায় মুখরিত পুরো সৈকত। পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে কুয়াকাটার ১৬টি পেশার মানুষ। তারা পর্যটকদের সেবা দিয়েই রোজগার করছেন।
কুয়াকাটা জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশ পরিদর্শক আবদুল খালেক বলেন, ‘ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে আমরা বিভিন্ন পয়েন্টে ছয়টি টিম নিয়োজিত রেখেছি। যাতে সব ধরনের অপ্রতিকার ঘটনা ঠেকানো যায়। ছুটির দিনগুলোতে বিশেষ করে কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভিড় থাকে। তাই তাদের সেবায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে।’
খুলনা গেজেট/এইচ