২০ ওভারে লক্ষ্য মাত্র ১৩১। ঢাকা লিগের শীর্ষে থাকা আবাহনী লিমিটেডের জন্য যা মামুলি। ধীরে-ধীরে এগোচ্ছিল জয়ের পথেই। পরপর দুই বলে আফিফ-সাইফকে ফিরিয়ে রং বদলে দিলেন মাহমুদউল্লাহ। দারুণ ফিল্ডিং করা গাজী গ্রুপের মাহেদি বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং মিস করে আবাহনীর জন্য সহজ করে দিলো। শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনার এই ম্যাচে জয় ১ উইকেটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আবাহনী।
সোমবার (২১ জুন) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ১৯.১ ওভারে ১৩০ রান করে সব উইকেট হারায় গাজী গ্রুপ। টার্গেটে খেলতে নেমে ১ বল বাকি থাকতে ১ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে মুশফিকুর রহিমের দল।
আবাহনীর জয়ের জন্য দরকার ২৭। ক্রিজে ছিলেন দুই সেট ব্যাটসম্যান শান্ত-আফিফ। হাতে ৩ ওভার। টি-টোয়েন্টিতে যা মামুলি। আর আফিফ-শান্তর জন্য চেনা মিরপুরে কোনও ব্যাপারই ছিল না।
এমন মুহূর্তে বোলিংয়ে এলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দ্বিতীয় বলেই লং অনে ৬ মেরে যেন হুঙ্কার দিলেন শান্ত। কিন্তু পারলেন না আফিফ, ১৮ বলে ১৪ রানে বিদায়। রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ফিরলেন বোল্ড হয়ে। পরের বলে মাঠে এসেই কাভারে ক্যাচ তুলে দিলেন সাইফউদ্দিন।
পরের ওভারেই আবাহনীর জয়ের ভিত গড়া শান্তকে বোল্ড করে ম্যাচের মোড় আরও ঘুরিয়ে দিলেন মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। ৪৯ বলে ৪টি চার ও ২টি ছয়ে খেলেন ৫৮ রানের ইনিংস। এ জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কারও তার হাতে ওঠে।
এমন টান টান উত্তেজনার মধ্যে ১৯তম ওভারে ৩টি ওয়াইড দেন মুগ্ধ। অবশ্য প্রথম ওয়াইড নিয়ে অসন্তোষ ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বাউন্ডারি লাইন থেকে ক্ষিপ্ত ভঙ্গিতে যান আম্পায়ারদের দিকে। সাইলেন্ট কিলার মাহমুদউল্লার রুদ্র মূর্তি দেখা গেলো আজ মিরপুরে।
এবার ক্রিজে এসে প্রথম বলেই চার মেরে কিছুটা সহজ করে দিলেন মেহেদী হাসান রানা। অবশ্য এর দায়টা লং অফে দাঁড়ানো ফিল্ডার মাহেদী হাসানেরও বেশি। এমন ফিল্ডিং মিস করায় অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ তেড়ে গিয়েছিলেন তার সতীর্থের দিকে!
আবাহনীর শেষ ওভারে দরকার ছিল ৯ রান। নাসুমের করা দ্বিতীয় বলে ৪ মেরে ম্যাচের নাটাই নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন রানা। পরের বলে অবশ্য ২ রান নিতে গিয়ে ফেরেন সাজঘরে। তবে জয়ের পথে তা বাধা হয়নি। জয়সূচক রান আসে তানজীম হাসান সাকিবের ব্যাট থেকে। স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে আবাহনী।
এর আগে লিটন দাস রানের আভাস দিয়ে, জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। আউট হয়েছেন ২২ রান করে। এ ছাড়া মুশফিক আউট হন ১২ রান করে।
গাজী গ্রুপের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মুগ্ধ। ২টি করে উইকেট নেন মাহেদী হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। এই জয়ে আবাহনীর শীর্ষস্থান আরও পাকাপোক্ত হলে। ১৩ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২০। ১ ম্যাচ কম খেলে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে গাজী গ্রুপ।
গাজীর পক্ষে ওপেনার সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ২৪ বলে ৩০ রান। তার ইনিংসে ২টি করে চার-ছয়ের মার। এ ছাড়া জাকির হোসেন করেন ২৫ বলে ২৭ রান। ১২ বলে ২৫ রান করে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন মুমিনুল হক।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ আউট হন ১৭ বলে ১৬ রান করে। তাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন রানা। মাহমুদউল্লার পর ক্রিজে এসে রানার একই ওভারে রানের খাতা না খুলে ফেরেন আরিফুল হক। উইকেটরক্ষক আকবর আলীও ফেরেন ডাক মেরে। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ১৩০ রানের বেশি করতে পারেনি গাজী।
আবাহনীর হয়ে সর্বোচ্চ ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এটাই সাইফউদ্দিনের সেরা বোলিং পারফরম্যান্স। এর আগে তার সেরা পারফরম্যান্স ছিল ২২ রান দিয়ে ৪ উইকেট। এ ছাড়া ৩ উইকেট শিকার করেন রানা।
খুলনা গেজেট/ এস আই