খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  পুকুরে গোসল করতে নেমে কুয়েট শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
  এবার ঈদুল আজহার ছুটি ১০ দিন
  জামায়াত নেতা আজহারের আপিলের পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার
  চিকিৎসা শেষে দীর্ঘ চার মাস পর দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, নেতাকর্মীদের অভ্যর্থনা নিয়ে ফিরোজায় খালেদা জিয়া

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিশুদের পাঠদান, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় অভিভাবকেরা

এস এস সাগর, চিতলমারী

টিনের ছাউনি ছিঁড়ে ঝুলে পড়েছে। ঝুলে পড়া টিনের নিচ দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাফেরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই ফুটো টিন দিয়ে গড়িয়ে পড়ে পানি। শিক্ষাথীদের বইখাতা ভিজে যায়। এ ছাড়া কক্ষের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। মাঝে মধ্যে দেয়াল থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। ভবনটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আর এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার ৪০ নং আড়ুয়াবর্ণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকেরা।

অপরদিকে, শ্রেণী কক্ষ সংকটে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এক বেঞ্চে গাদাগাদি করে পাঠদান করছে। তাই শিক্ষার মানোন্নয়নে ওই স্কুলের শিক্ষকেরা নতুন ভবন নির্মাণের দাবি করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আড়ুয়াবর্ণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি সরকারিকরণ হয় ১৯৭৩ সালে। ১৯৮৯ সালে চার কক্ষবিশিষ্ট টিনের ছাউনির এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে এ ভবনের দুটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান, একটি কক্ষ স্টোর ও একটি কক্ষ বিদ্যালয়ের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের অনেক জায়গায় দেয়াল ও বিমে ফাটল ধরেছে। খসে পড়ছে ছাদের পলেস্তারা। টিনের ছাউনি ছিঁড়ে ঝুলে পড়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনে পঞ্চম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। এ বিষয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।

৪০ নং আড়ুয়াবর্ণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সানিয়া তাবাচ্ছুম, তানিয়া, আয়শা, সম্রাট ও দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী জায়মা খান, শাকিবুল ও শহিদুল জানায়, ওই কক্ষে ক্লাস করতে তাদের ভয় লাগে। তাছাড়া সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে বইখাতা ভিজে যায়। ক্লাসে ছাদের পলেস্তারা খুলে তাদের গায়ে পড়ে। অনেক ভয় লাগে। আকাশে মেঘ দেখলে বাবা-মা স্কুলে আসতে দিতে চান না।

শাহা আলম দাড়িয়া ও রহমত মোল্লা নামের দুই অভিভাবক বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ে আমাদের সন্তান পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়ের ভবন এমন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকি। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হচ্ছে না।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুলতানা পারভিন ও লোপা রানী মন্ডল জানান, একদিকে শ্রেণী কক্ষের স্বল্পতার জন্য শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসতে হয়। যার জন্য পাঠদান ব্যাহত হয়। অপরদিকে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ ফেরদাউস হোসাইন বলেন, ‘আমার স্কুলে ২২৬ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই ভবনটিতে শিক্ষকরা পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন। এটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কারো কাম্য নয়। এ ছাড়া এখানে অনুমোদিত শিক্ষকের পোস্ট ৯ টি। কর্মরত আছেন ৮ জন। তার মধ্যে একজন ডেপুটিশনে।’

তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে তারা শুধু দীর্ঘদিন থেকে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন।

চিতলমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতানন্দ দাস জানান, বিদ্যালয়ের ভবনটি আসলে ঝুঁকিপূর্ণ এটা আমি জানি। প্রধান শিক্ষকের কাছে কাগজপত্র চেয়েছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!