করোনাকালীন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ও যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগীদের সেবা করে যাচ্ছেন সার্বক্ষণিক। ইতোমধ্যে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেশ কয়েকজন ডাক্তার আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় মারা গেছেন দুইজন।
করোনার সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে শার্শা উপজেলার সব কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বেনাপোল বন্দরে ভারতফেরত বাংলাদেশি যাত্রীদের নিরলসভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে গোটা স্বাস্থ্য বিভাগ।
গত ২৬ এপ্রিল থেকে একটানা সকাল ৭টা থেকে রাত পর্যন্ত বেনাপোল পোর্ট এলাকায় দায়িত্ব পালন করেছেন। উদ্দেশ্য হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত হতে আগত বাংলাদেশিদের দুই সপ্তাহের জন্য বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা ও তাদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া।
কোভিড-১৯ মহামারির সাম্প্রতিক ঢেউ ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর বিরাট আঘাত হেনেছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ট্রিপল মিউট্যান্ট করোনা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য ২৬ এপ্রিল থেকে ভারতের সঙ্গে যাত্রী চলাচলে সাধারণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
তবে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় যাদের ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে তারা কলকাতার বাংলাদেশের উপহাইকমিশন থেকে এনওসি সংগ্রহ করে দেশে আসতে পারবেন। দেশে আসার পর বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নিজ খরচে থাকতে হয়।
ভারতফেরত যাত্রীদের এ পর্যন্ত মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৮৭ জন। ফেরত আসা যাত্রীদের মধ্য তিন মাসে ১৭ কোভিড পজিটিভ রোগী রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে দেশে ফেরার পর ১৪ দিনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নিজ খরচে থাকার পাশাপাশি সব ধরনের কার্যক্রম করছেন তারা।
করোনায় ঝুঁকি নিয়ে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউছুফ আলী। সহযোগিতা দিচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা, নাভারন সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান, এসিল্যান্ড রাসনা শারমিন মিথি, শার্শা থানার ওসি বদরুল আলম ও বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান।
ডা. ইউছুফ আলী জানান, করোনাকালীন ভারত ফেরত যাত্রীদের সেবা দিতে রাত-দিন কাজ করছি জাতীয় স্বার্থে। দেশকে নিরাপদ রাখতে বেনাপোল দিয়ে ১৭ জন করোনা রোগীসহ সাড়ে ৭ হাজার ভারতফেরত যাত্রীদের নিরাপদে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখতে পেরেছি। এখানে দুটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মারাত্মক অসুস্থ যাত্রীদের বিশেষায়িত হাসপাতালে রেফার করা, কোয়ারেন্টিন শেষে নেগেটিভ সনদ প্রদান এবং যাদের করোনা পজিটিভ আসে তাদের প্রশাসনের মাধ্যমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের তাৎক্ষণিক স্যাম্পল নিয়ে জিন এক্সপার্ট ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন আরটিপিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে এক ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করা হচ্ছে।
উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে কনসেনট্রেটর এবং ৩৯টি কমিউনিটি ক্লিনিকে পালস অক্সি মিটার প্রদান করা হয়েছে। ভ্যাকসিন শুরু থেকে কোভিশিল্ড ও সিনোফার্মের টিকা ২০ হাজার মানুষের মাঝে প্রদান করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই