খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

ঝিনাইদহে পরীক্ষার হলে ছাত্রলীগ নেতার লাইভ, কমিটি বিলুপ্ত

নিজস্ব প্রতি‌বেদক

ঝিনাইদহে পরীক্ষা চলাকালীন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুকে লাইভের পর কমিটি বিলুপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শনিবার রাতে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।

ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রানা হামিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কালীগঞ্জ উপজেলা শাখা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।

সদ্যবিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমনের পরীক্ষার হলে বসে করা ৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের লাইভ ভাইরাল হলে শুরু হয় সমালোচনা। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে গত শুক্রবার দুপুরে কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন বিষয়ের পরীক্ষা চলার সময় ফেসবুকে লাইভ করেন সুমন।

লাইভে সুমন বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা চলছে। সবাই লেখছে, আমি বসে আছি। আমি তো বাংলায় লিখিনি। সব ইংরেজিতে। আমি লিখেছি গ্রুপ কী, তা আনার গ্রুপ। আমার নেতার নাম দিয়ে দিছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষা চলছে। জীবনে আজ রেকর্ডধারী পরীক্ষা দিলাম। চশমাটা চোখে দিয়ে নেই। না হয় ভাব বাড়ছে না পরীক্ষার হলে। আমরা তো ফার্স্ট ছাত্র। ফার্স্ট বেঞ্চিতে বসেছি। যাই হোক, পারি আর না পারি। আমার খাতা দেখবেন? এই দেখেন।

‘আমার খাতায় আমি লিখেছি। ইংরেজিতে মাস্টার্স করা তো। দেখেন সব ইংরেজিতে লিখেছি। সালামও লিখেছে।’

এক শিক্ষার্থীকে দেখিয়ে সুমন বলেন, ‘কী লিখিছিস তুই মনি? ওই একটা খালা পরীক্ষা দিচ্ছে ওই পাশে। ওই যে একটা খালা। ভাইস চেয়ারম্যান দেখছে লাইভ। কাকা আমরা সত্যি সত্যি পরীক্ষা দিচ্ছি।’

এরপর ফোনের ক্যামেরা খাতার দিকে ঘুরিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। আমরা ইয়ার্কি মাচ্ছি নে। আমাদের কম্পিউটার সার্টিফিকেট তৈরি হয়ে যাচ্ছে। আমরা আছি ঝিনাইদহ পলিটেকনিক কলেজে।’

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অ্যাকাডেমিক ইনচার্জ মাহবুব উল ইসলাম বলেন, ‘পরীক্ষা শেষের দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। ফেসবুকে লাইভ করা নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সদ্য বিলুপ্ত কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমন বলেন, পরীক্ষার কক্ষে ফেসবুক লাইভে এসেছিলাম, এটা আহামরি কিছু না। বিষয়টি খারাপ কিছু বলে আমি মনে করছি না। পরীক্ষা কক্ষে তখন আমাদের ম্যাডামরা ছিলেন। সে সময় আমি নিজের ফোন থেকেই ফেসবুকে লাইভ করি। তবে ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল একটা পদে থেকে কাজটি করা উচিত হয়নি। কিন্তু মানুষ একটা ভুল করলে তাকে এতো চেপে ধরতে হবে কেন? তাকে রক্ষা করাই সংবাদকর্মীদের কাজ। অথচ তারা রক্ষা না করে এটা প্রকাশ করে দিচ্ছে। বিষয়টি খুবই আশ্চর্যজনক।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার জানান, একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এটা করতে পারে না। আমি বিষয়টি জেনেছি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাংগঠনিকভাবে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!