খুলনা, বাংলাদেশ | ৩রা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান তালুকদার আর নেই
  ৩ ঘন্টা শিথিলের পর গোপালগঞ্জে পুনরায় কারফিউ চলছে

ঝিনাইদহ আদালতে জাল কোর্ট ফি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে কোর্ট ফি জালিয়াতিকে ঘিরে। মহেশপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে জমা পড়া অধিকাংশ দেওয়ানি মামলার ফাইলে ব্যবহৃত কোর্ট ফি জাল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব, আর লাভবান হচ্ছে একটি অসাধু সিন্ডিকেট।

জানা গেছে, সম্প্রতি একটি জমিজমা সংক্রান্ত দেওয়ানি মামলার আবেদনে লাগানো কোর্ট ফি যাচাই করতে বলেন আদালতের বিচারক। গত ৮ জুলাই মেশিনে যাচাই করে দেখা যায়, সেটি জাল। পরে একাধিক মামলার আবেদনের কোর্ট ফিও পরীক্ষা করে দেখা হয়। অধিকাংশ ফিতে নেই সরকারি জলছাপ, সিরিয়াল নম্বর বা বৈধতার চিহ্ন।

এই ঘটনায় আদালতের সেরেস্তাদার আবু সাঈদ বাদী হয়ে ১০ জুলাই মহেশপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আদালত চত্বরের আশপাশে থাকা কয়েকটি স্ট্যাম্প ভেন্ডার ও ফটোকপির দোকান থেকেই এই জাল কোর্ট ফি সরবরাহ করা হচ্ছে। সাধারণত পাঁচ, দশ ও বিশ টাকার কোর্ট ফি পাওয়া গেলেও সবচেয়ে বেশি জাল কাগজ পাওয়া যাচ্ছে বিশ টাকার ফিতে।

একাধিক আইনজীবী সহকারী অভিযোগ করে বলেন, “আমরা স্ট্যাম্প ভেন্ডারদের দোকান থেকে কোর্ট ফি কিনি। যাচাই করার যন্ত্র না থাকায় জাল কাগজ বুঝে ওঠা সম্ভব হয় না।”

এ বিষয়ে মহেশপুরের স্ট্যাম্প ভেন্ডার বাবর আলী বলেন, “আমার দোকানের কোর্ট ফি জাল প্রমাণিত হয়নি। তবে এটা সত্য, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত লাভের আশায় নকল কোর্ট ফি বিক্রি করছে। অনেকেই বুঝতেই পারছে না তাদের কেনা কাগজ জাল।”

মহেশপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের সেরেস্তাদার আবু সাঈদ বলেন, “বিচারকের নির্দেশে আমরা তদন্ত করে দেখি বেশিরভাগ ফি-ই জাল। এরপরই মামলা করি এবং পুলিশের সহায়তা চাই।”

মহেশপুর থানার ওসি (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান সাজু জানান, “আমরা তদন্ত শুরু করেছি। আদালতের দেওয়া জাল কোর্ট ফির নমুনা এবং সংশ্লিষ্ট দোকানগুলোর কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

এই ঘটনায় মহেশপুর আদালতের আইনজীবী সমাজসহ সচেতন মহল তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে জালিয়াত চক্রকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!