যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভা নির্বাচনের দশজন কাউন্সিলর প্রার্থী ভোটের মাঠ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। থানা পুলিশের সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে তারা আত্মগোপন করেছেন। শুধু তারা নয়, ওইসব কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থক ও ভোটারদের টার্গেট করে মামলার সূত্র ধরে পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ অভিযোগে রোববার প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করেন পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান হোসেন কাঁকনের স্ত্রী সুমাইয়া ইয়াসমিন।
সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া ইয়াসমিন বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর বিরতির পর আগামী ১৬ জানুয়ারি ঝিকরগাছা পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে আমার স্বামী আরমান হোসেন কাঁকন ৫ নং ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর প্রার্থী। প্রার্থী হবার পর থেকেই তিনি স্থানীয় কিছু মানুষের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। এর একমাত্র কারণ হলো আমার স্বামী বিএনপির আদর্শের বিশ্বাসী। প্রতিদ্বন্দ্বি রাজনৈতিক দলের সমর্থিত প্রার্থীরা আমার স্বামীসহ বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসী প্রার্থীদের একের পর এক হয়রানি করে চলেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ঝিকরগাছা থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম বাদি হয়ে আমার স্বামীসহ পৌরসভার ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডসহ আরও কয়েকটি ওয়ার্ডের দশজন বিএনপিপন্থী কাউন্সিলর প্রার্থীদের নাম উল্লেখসহ ৬০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা হলেন, ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আরমান হোসেন কাঁকন, মোবারকপুর গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী পিয়াল হাসান, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মিজানুর রহমান কালু, নুরুজ্জামান বাবু, সরদার শহিদুল ইসলাম বুদো ও একই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মশিয়ার রহমান, ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মিজানুর রহমান বিশ্বাস, ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং প্রার্থী গোলাম কাদের বাবলু, ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুজ্জামান বাবলা, বর্তমান কাউন্সিলর এবং প্রার্থী মতিয়ার রহমান ও আব্দুর রশিদ। বর্তমানে এরা সবাই হয়রাণি এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন।
প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আগামী ১৬ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রতিদিন গভীররাতে এসব প্রার্থীদের বাড়িতে পুলিশ গিয়ে খোঁজাখুজি করছে। এতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। গ্রেপ্তারের ভয়ে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছেন না এসব প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।
তিনি বলেন, এসব অভিযোগ জেলা, উপজেলা নির্বাচন অফিসার ছাড়াও নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা। তারপরও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের নির্বাচনে সুযোগ করে দিতে ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী প্রার্থীদের এ জাতীয় হয়রাণি করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া ইয়াসমিন ছাড়াও আত্মগোপনে থাকা অন্যান্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই